শামীমুল ইসলাম শামীম,ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ০১ মার্চ ২০১৮ঃ  আগামী সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ি নির্দ্ধারিত সময়ে হবে । এর বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই । বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আমরা মামলা দেয়নি।দুর্নীতি প্রমানিত হওয়ায় আদালত তাকে সাজা দিয়েছে । বিএনপি নেতারা চায় বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে থাক । আন্দোলন করে তাকে কারাগার থেকে মুক্ত করা যাবেনা । আইনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করতে হবে । বিএনপি আন্দোলন কর্মসুচী দিয়ে আদালত আবমাননা করছে । আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে ঝিনাইদহ ওয়াজির আলী হাই স্কুল মাঠে পৌর আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির ভাষনে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব উল আলম হানিফ এমপি এ সব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ি নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধান কাটা ছেড়া বা কোন পরিবর্তন করার কোন সুযোগ নাই। বিএনপি সেই নির্বাচনে পতিপক্ষ হয়ে বিজয়ী হাওয়ার সম্ভবনা নাই। কারন তারা হাওয়া ভবনের মাধ্যমে প্যরালাল সরকার তৈরী করে কোটি কোটি টাকার দুর্ণীতি করেছে।

মাহবুব-উল আলম হানিফ আরো বলেছেন, বিএনপির মহাসচিবসহ নেতারা বলেছেন খালেদা জিয়া কারাগারে পর নাকি বিএনপির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন নাকি ১০লাখ ভোট বাড়ছে। এগুলো বলার অর্থ হচ্ছে খালেদা জিয়া কারাগারে থাকুন, আর বিএনপির জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাক। তিনি বলেন খালেদাজিয়া এতিমের টাকা আত্ধসঢ়;ণসাত করেছেন। এঘটনা প্রমানিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত তাকে কারাদন্ড দিয়েছেন এর জন্য আওয়ামীলীগের কোন দায়নেই। বিএনপির নেতারা আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন।

হানিফ আরো বলেন,বিএনপি জোট দশ বছর ক্ষমতায় থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান ২৮৬টি সুটকেসে বিদেশে টাকা পাচার করেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান ২৮৬টি সুটকেস নিয়ে হজে যান। ওই সুটকেসে টাকা পাচার করেছেন। দেশের টাকা পাচার করে অন্য দেশে বিনিয়োগ করেছেন।্#৩৯;বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের ওয়াজির আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবিধান যখন-তখন কাটাছেঁড়া করা সম্ভব নয় মন্তব্য করে হানিফ বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। তিনি আরো বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া জয়লাভ করার মতো আর কোনো দল নেই। কারণ, মানুষ বিএনপিকে ভোট দিয়ে দেখেছে। ২০০১ সালে তারা ক্ষমতায় এসে তার (খালেদা জিয়া) দুই ছেলে হাওয়া ভবন তৈরি করে। পর পর পাঁচবার দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন বানায়।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মামলার রায়ে আওয়ামী লীগের হস্তক্ষেপ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৮ সালে এই মামলা করে। ১০ বছর আইনি লড়াইয়ের পর ২০১৮ সালে রায় দিয়েছেন আদালত। আদালতের রায়ে কেন আওয়ামী লীগের হস্তক্ষেপ থাকবে?’বিএনপির অনেক নেতা খালেদা আর তারেকের নেতৃত্ব মানতে চায় না মন্তব্য করে দলটির নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আন্দোলন করে খালেদা জিয়াকে জেল থেকে বের করা যাবে না। আইনি লড়াই করেই
তাকে মুক্ত করতে হবে।’

দীর্ঘ প্রায় ২৪বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঝিনাইদহ পৌর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে নেতাকর্মীদের মাঝে। মিছিল আর শ্লোগানে মুখরিত সম্মেলন স্থান। থেমে থেমে চলছে পদ প্রত্যাশী নেতাদের পক্ষে মিছিল আর শ্লোগান। স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য প্রদানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই এমপি। সভাপতিত্ব করেন পৌর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি ডা. আজিজুর রহমান।বেলা ১২টার দিকে সম্মেলন স্থলে আসেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ।

এসময় নেতা কর্মীরা শ্লোগান আর করতালি দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। আগামী এক মাসের মধ্যে ঝিনাইদহই জেলার যে সকল উপজেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি নাই, সেগুলো করতে বলেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। তিনি উপস্থিত নেতা কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা মসব সময় উন্নয়নের পাশে থাকবেন, নৌকার পাশে থাকবেন। উন্নয়ন দেখতে চাইলে আওয়ামীলীগের বিকল্প নাই।

এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম- সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হানিফ এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন এমপি, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কার্যানির্বাহী সংসদের সদস্য পারভীন জামান কল্পনা।এছাড়া স্থানীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঝিনাইদহ-২ আসনের সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি , জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র সাইদুল করিম মিন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ – সভাপতি সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম অপু প্রমুখ।দীর্ঘ ২৪ বছর পর বিপুল উৎসাহ ও উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে ঝিনাইদহ পৌর আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ১৯৯৪ সালে সদর পৌর আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় । যে কারনে দলীয় নেতা কর্মিদের মাঝে বিপুল উৎসাহ লক্ষ্য করা যায় ।

সকাল থেকে ব্যানার ফেষ্টুন নিয়ে মিছিলসহ সম্মেলন স্থলে হাজির হন তারা । তাদের শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে সারা এলাকা। সম্মেলনে ঝিনাইদহ জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এম হারুন অর রশিদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে কয়েক হাজার নেতা কর্মি আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। দীর্ঘ ২৪ বছর পরে অনুষ্ঠিত হলো এ সম্মেলন । শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দ্বিতীয় অধিভিশন স্থানীয় পৌর কে আহম্মদ কমিউনিটি সেন্টারে চলছে । সেখানে নির্বাচিত করা হবে সদর পৌর আওয়ামীলীগের নতুন নেতৃবৃন্দ ।