শফিউর রহমান সেলিম, গফরগাঁও প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে শাশুড়িকে দা দিয়ে এলোপাথারি কুপিয়ে নৃসংশ ভাবে হত্যা করেছে খাদিজা বেগম (২৫) নামে এক মাত্র ছেলের বউ খাদিজা বেগম। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বুধবার রাত সাড়ে  ৯ টায় উপজেলার চারিপাড়া গ্রামে আকন্দ বাড়ি।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন গফরগাঁও সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রায়হানুল ইসলাম ও গফরগাঁও থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) আবদুল আহাদ খান। এ ঘটনায় রাতেই পুত্রবধু খাদিজাকে বাড়ি থেকে আটক করেছে গফরগাঁও থানা পুলিশ।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশ ও নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বারবারিয়া ইউনিয়নের চারিপাড়া আকন্দ বাড়ির ইসলাম আকন্দের সাথে ১৭ বছর আগে পাচঁবাগ গ্রামের খাদিজা বেগম (৩২)এর সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে খাদিজা শাশুড়ি রমিজা খাতুন (৬০)কে নানা ভাবে অত্যাচার, নির্যাতন করে আসছে। গত ৭ বছর আগে রমিজার স্বামী  শামছুল হক উরফে মালি মারা যাওয়ায় নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়।

ছেলে ও ছেলের বউ খাবার না দেওয়ায় ৭ মাস যাবত আলাদা ভাবে দিন যাপন করিতেছে। কিন্তু তাতেও নির্যাতন বন্ধ না হওয়ায় এক মাত্র ছেলে ইসলাম আকন্দ ও বউ খাদিজার বিরুদ্ধে সুবিচার চেয়ে গত ১ মাস আগে স্থানীয় বারবারিয়া ইউনিয়ন পরিষদে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রমিজা বেগম। অভিযোগের ভিত্তিতে ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেমের নির্দেশে স্থানীয়দের মাধ্যমে মিটমীমাংশা করে দেন।

ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বিচার চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে খাদিজা বেগম শাশুড়ি রমিজাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনামত গতকাল বুধবার রাত সাড়ে নয়টায় শাশুড়ি রমিজা খাতুন এশার নামাজ শেষে রাতের খাবর খাওয়ার সময় খাদিজা বেগম দা দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে এলোপাথারী কুপিয়ে হত্যা করে বাহির দিয়ে দরজা আটকিয়ে দেয়। দাদুকে নির্মমভাবে হত্যার দৃশ্য দেখে নাতী সাদিয়া আরিফিন ইভার (১৪) ডাক চিৎকার শোনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে খাদিজাকে ঘরের ভীতর আটকে রেখে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছেন গফরগাঁও সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রায়হানুল ইসলাম ও গফরগাঁও থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) আবদুল আহাদ খান। এ ঘটনায় রাতেই পুত্রবধু খাদিজাকে বাড়ি থেকে আটক করেছে গফরগাঁও থানা পুলিশ। এ ঘটনায় মেয়ে দিলুয়ারা খাতুন দিলু বাদী হবে ভাবি খাদিজা বেগমকে আসামী করে গফরগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

গফরগাঁও থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) আবদুল আহাদ খান বলেন, হত্যাকান্ডের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

গফরগাঁও সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রায়হানুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক কলহের জের দরে হত্যাকান্ডটি ঘটেছে। শাশুড়িকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে পুত্রবধু খাদিজাকে আটক কারা হয়েছে।