কুড়িগ্রামের বীর প্রতীক তারামন বিবি গুরুতর অসুস্থ ঢাকায় সিএমএইচ হসপিটালে ভর্তি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ ০৮.১১.১৮ স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখা কুড়িগ্রামের বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত তারামন বিবি আবারো গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় বিকেলে তাকে ঢাকায় সিএমএইচ হসপিটালে প্রেরণ করা হয়েছে। দীর্ঘদিনের শ্বাসকষ্ট আর কাশি তার শরীরে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে শীত শুরু হওয়ায় তার ঠান্ডা লেগে শ্বাসকষ্ট বেড়েছে। গত কয়েকদিন যাবত তিনি নিজে নিজে হাঁটা চলা ভালোভাবে করতে পারছেন না। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ময়মনসিংহ সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
পরে শারিরিক অবস্থার অবনতি হলে বিকেলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টার যোগে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। নিয়ে অসুস্থ্য তারামন বিবিকে চিকিৎসা সেবা দিতেন ও নিয়মিত খোঁজখবর নিতেন রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা। রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন জানান, ঠান্ডা জনিত কারণে তারামন বিবির শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় সঙ্গে কাশিও অনেক বেড়ে গেছে। শ্বাস কষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে কয়েক বার অক্সিজেন ও নেবুলাইজেশন এর সহযোগিতা নিয়ে শ্বাস প্রশ্বাস নিতে হয়। তিনি অসুস্থ্য হওয়ায় একাই চলাফেরা করতে পারতেন না। অবস্থার অবনতির কারণে ময়মনসিংহ হাসপাতালে নিতে বলা হয়েছে।
তারামন বিবির ছেলে আবু তাহের জানান, রাজীবপুর হাসপাতালের চিকিৎসকের নিয়মিত বাড়িতে এসে চিকিৎসা দিত। কিন্তু বুধবার রাতে মায়ের শরীরের অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহ নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। তাই তাকে ময়মনসিংহ সিএমএইচ হসপিটালে নেয়া হয়। এখন মায়ের অবস্থার অবনতি হওয়ায় হেলিকপ্টার যোগে ঢাকা সিএমএইচ হসপিটালে নেয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, মায়ের অসুস্থ থাকায় একাই চলাচল করতে পারত না। অন্যের সহযোগিতা নিয়ে চলাচল করত। তিনি তার মায়ের সুস্থ্যতার জন্য সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোছাঃ সুলতানা পারভীন জানান, আমি প্রতিনিয়ত তার খোঁজখবর রাখছি এমনকি ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসককেও তার অসুস্থ্যতার বিষয়টি অবহিত করেছি। তিনি যাতে উন্নত চিকিৎসা সেবা পান সেটা নিশ্চিত করা হচ্ছে। তাকে ঢাকায় প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে।
উল্লেখ্য,কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার কাচারীপাড়া গ্রামে পবিবারের সাথে বসবাস করেন বীরপ্রতীক তারামন বিবি। ১৯৭১সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১নং সেক্টরের হয়ে তারামন বিবি জীবন বাজি রেখে মুক্তিবাহিনীদের রান্না বান্না, তাদের অস্ত্র লুকিয়ে রাখা, পাকবাহিনীদের খবরা খবর সংগ্রহ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য দেয়া এবং সম্মুখ যুদ্ধে পাকবাহিনীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করায় তার অনেক অবদান রয়েছে। এ কারনে তাকে বাংলাদেশ সরকারের বীরপ্রতীক খেতাব পান তিনি।