বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে বন্ধ হচ্ছে না স্বর্ণ চোরা-চালান

বেনাপোল সীমান্ত এলাকাকে এখন সোনা এবং হুন্ডি চোরাচালানীরা নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বেনাপোল ও ভারতের হরিদাসপুর উভয় সীমান্তের ৮ কিলোমিটার এলাকা ‘ফ্রি ক্রাইম জোন’ এলাকা ঘোষণা করলেও থেমে নেই সোনা ও হুন্ডি পাচার। গত ৩১ জানুয়ারি থেকে ১৬ মে পর্যন্ত ১৩ দফায় প্রায় ২৮ কেজি সোনা জব্দ করেছে বিজিবি। একই সময়ে তারা ১১টি অভিযানে প্রায় পৌণে ৪ কোটি হুন্ডির মুদ্রা জব্দ করেছে। এ সব অভিযানে সোনা ও হুন্ডি চোরাকারবারীর সঙ্গে জড়িত ২০ জনকে আটক করা হয়েছে। বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভারতে পাচার হচ্ছে সোনা। ভারতে থেকে আসছে চোরা পথে বৈদেশিক মুদ্রাও।
সোনা ও হুন্ডির টাকা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত যারা প্রশাসনের হাতে আটক হচ্ছে তার আসলে কেউ এসব সোনা বা মুদ্রার মালিক নয়, বাহক মাত্র। ৩ মাসে ২৮ কেজি সোনা ও পৌণে ৪ কোটি হুন্ডির মুদ্রা জব্দ হলে ও ধরা পড়েনি সোনা এবং হুন্ডি পাচারের সাথে জড়িত কোন মহাজন বা মালিক।কিন্তু এ সময় ২০ জন বাহককে আটক করেছে বিজিবি,বিএসএফ ও কাষ্টমসের গোয়েন্দা সদস্যরা। স্থানীয় প্রশাসনের ভাষ্যমতে বেনাপোল বাজারে গড়ে ওঠা একটি বাহক সিন্ডিকেট সোনা পাচারের সাথে জড়িত। স্থানীয় ভাষায় বাহক বা ক্যারিয়ার বেনাপোল বাজার থেকে মাত্র ৩ শ টাকার বিনিময়ে প্রতিটি সোনার বার পৌছে দেওয়ার দায়িত্ব নেয় তারা। নাম মাত্র কিছু চালান জব্দ হয় মাত্র। বাকি চালান রয়ে যায় ধরা-ছোয়ার বাইরে। তবে সোনা বহন বা পাচারের সাথে জড়িত ৩ টি গ্রুপকে ইতোমধ্যে চিিহ্নত করেছে প্রশাসন।
কাস্টমস, বিজিবি ও পুলিশের বিভিন্ন সুত্র জানায় প্রথম গ্রুপটি বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্টে যাত্রী সেজে সোনা বহন করে থাকে। শরীরের বিভিন্ন অংশে কৌশলে লুকিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বেনাপোল চেকপোষ্ট দিয়ে পাচারের সাথে জড়িত এরা। অবৈধ পথে বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে সোনা পাচার করছে এ সব বহন কারীরা। কিছু ভুয়া পরিচয় পত্র ধারী সিএন্ডএফ কর্মচারীরা ও এই সোনা পাচারের সাথে জড়িত।
বেনাপোল বাজারসহ পাশ্ববর্তী সীমান্ত এলাকা পুটখালী,দৌলতপুর,সাদিপুর, রঘুনাথপুর এবং ঘিবা গ্রামের কিছু যুবক ও এ সব বহন কাজে জড়িয়ে পড়েছে। তবে আটক বহনকারীরা কখন ও মহাজনদের নাম বলে না কিংবা নাম বের করার কোন চেষ্টা ও করা হয় না প্রশাসনেসর পক্ষ থেকে। আর এ কারণেই সোনা চোরাচালানীর মূল হোতারা রয়ে যায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে। বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় চোরাচালানীরা সোনা পাচারে এ পথ ব্যবহার করছে।
বেনাপোল কাস্টমস শুল্ক গোয়েন্দার উপ-পরিচালক সাইফুর রহমান জানান, বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্রে খবর পেয়ে আমরা সোনাসহ পাচারকারীদের আটক করে থাকি। পাশাপাশি আমাদের গোয়েন্দারা সর্বদা সজাগ দৃষ্টি রাখেন, যাতে দেশের সোনা পাচার হয়ে বাইরে না যায়। এ ব্যাপারে বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি (তদন্ত) ফিরোজ হোসেন জানান, পুলিশ সোনা ও হুন্ডি পাচারের কোন তথ্য পেলে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে তা আটক করে। বেনাপোল পোর্ট থানার রেকর্ড আছে বিগত দিনগুলোতে সোনার বড় বড় চালান আটক করার।
« নাশকতার মামলায় সাতক্ষীরায় দুই শিবিরকর্মী গ্রেফতার (পূর্বের খবর)
(পরের খবর) হাতীবান্ধায় আশার ফিজিওথেরাপি ক্যাম্প »