মরহুমা বেগম কাজী জেবুন্নেছা এর রুহের মাগফিরাত কামনায় কুলখানী ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠীত হয়।

আজ ১৬ ই অক্টোবর বাদ মাগরিব ২নং এল.ডি হল, জাতীয় সংসদ ভবনে মরহুমা বেগম কাজী জেবুন্নেছা এর রুহের মাগফিরাত কামনায় কুলখানী ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠীত হয়। বেগম কাজী জেবুন্নেছা গত ১২-১০-২০১৮ ইং তারিখ শুক্রবার ঢাকার সমরিতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৯:৪৫ ঘটিকায় মৃর্ত্যু বরন করেন (ইন্নালিল্লাহি…..রাজেউন )।
মৃর্ত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৯৫ (পঁচানব্বই) বছর। ১২-১০-২০১৮ ইং তারিখ শুক্রবার বাদ এশা ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কাউলীবেড়া গ্রামের কাজী বাড়ি পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
তিনি ১৯২৩ সালে বরিশাল জেলার দশমিনা উপজেলায় একটি সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তখনকার দিনে মুসলমান রক্ষণশীল পরিবারে নারী শিক্ষার প্রচলন ছিল না বললেই চলে। তাই অষ্টম শেণি পর্যন্ত স্কুলে লেখাপড়া করেই তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পরিসমাপ্তি ঘটে। ১৯৪৩ সালে তিনি কাজী মাহবুব উল্লাহর সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন।
বেগম জেবুন্নেছা কেবলমাত্র গৃহকর্মেই নিয়োজিত ছিলেন না, সমাজ সেবামূলক কাজেও তিনি আত্ননিয়োগ করেন। নারী শিক্ষার প্রসারের উদ্দেশ্যে তিনি ১৯৮৪ সালে তিনি তার মায়ের নামে নিজ গ্রাম পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় “বেগম আরেফাতুন্নেছা বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ” এবং ১৯৮৬ সালে তার বাবারনামে ”আবদুর রশিদ তালুকদার ডিগ্রী কলেজ” প্রতিষ্ঠা করেন। এছাড়া ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলায় ”সরকারী বেগম কাজী জেবুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়” নামে একটি স্কুল স্থাপন করেন। বেগম জেবুন্নেছা নিজ প্রচেষ্টায় ১৯৭৮ সালে হলিফ্যামিলি হাসপাতালে ”বেগম জেবুন্নেছা ওয়ার্ড” স্থাপন করেন এবং লায়ন্স চক্ষু হাসপাতালে তিনি তার মায়ের নামে একটি বেডও স্থাপন করেন।
ব্যক্তিগতভাবে অনাথ, দু:খী, গরীব আত্নীয়দের সহানুভূতির চোখে দেখা এবং বিপদে-আপদে সাহায্য করা তার চরিত্রের একটি বিশেষ দিক। পারিবারিক জীবনে তিনি অত্যন্ত গুণী, পরিশ্রমী, নিয়মানুবর্তী এবং ধর্মভীরু। বেগম জেবুন্নেছা ও কাজী মাহবুবউল্লাহ জনকল্যাণ ট্রাস্টের তিনি একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।
মৃত্যুকালে তিনি ৩ পুত্র, ২ কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার বড় ছেলে কাজী জাফর উল্লাহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য, মেজ ছেলে ড. কাজী শহীদুল্লাহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক, ছোট ছেলে কাজী একরাম উল্লাহ, বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী। বড় মেয়ে জোবায়দা মাহবুব লতিফ বর্তমানে বেগম জেবুন্নেছা ও কাজী মাহবুবউল্লাহ জনকল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান এবং ছোট মেয়ে সাবিহা মাহবুব, বিশিষ্ট নজরুল সংগীত শিল্পী।