প্রধান মেনু

দেড় শতাধিক ঘর-বাড়ি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিলীন দুই সপ্তাহে

নিজস্ব  প্রতিনিধিঃ- যমুনার অব্যাহত ভাঙনে বিপর্যস্ত সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা সদরের বাকি এলাকাটুকু রক্ষায় ১০৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৭ কিলোমিটার জুড়ে তীর সংরক্ষণে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে ১ বছরে ১৭বার ধস নামে। এদিকে নদীতে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাঁধ পেরিয়ে উত্তরপাশে কয়েক গ্রাম জুড়ে দেখা দিয়েছে ভয়াবহ ভাঙন। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দুইটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিলীন হয়েছে দেড় শতাধিক ঘর-বাড়ি।
এ ছাড়া বিলীনের অপেক্ষায় আরো হাজারো ঘর-বাড়ি, সহস্রাধিক একর আবাদি জমিসহ অন্যান্য স্থাপনা। তাই এখানে মানুষ হতাশায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। এ ছাড়া অতি ভাঙনের কারণে সদ্য নির্মিত বাঁধটিও ক্ষতির আশঙ্কা করছে পাউবোসহ স্থানীয়রা। এ অবস্থায় ভয়াবহ ভাঙনের রশি টেনে ধরতে পাউবো ১৮ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে। তবে তা এখনো টেন্ডার প্রক্রিয়া না হওয়ায় চাপা ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে সবার মাঝে।
চৌহালী উপজেলার খাসকাউলিয়া গ্রামে বাঁধের পাশে বসবাসকারী দরিদ্র দিনমজুর সাইফুল ইসলাম ও আব্দুল হালিম জানান, দরিদ্রদের থাকার জায়গা না থাকা যে কি কষ্ট তা আমরাই জানি। নদীতে সব বিলীন হওয়ায় কয়েক দফা বাড়ি অন্যত্র সরিয়েছি। কোথাও আশ্রয়ের জায়গা নেই। নতুন বাঁধ হওয়াতে এর পাড়ের পাশেই ঘর তুলেছি।
এ ব্যাপারে মাহমুদনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাজেদুর রহমান তালুকদার, প্রবীণ সমাজ সেবক কৃষক গাজী আব্দুল জলিল, আব্দুল হাকিম মণ্ডল, শফিকুল আলম, নার্গিস বেগম জানান, আমরা সবাই ভাঙনে বিপর্যস্ত মানুষ। কোনো রকমে ঠাঁই নিয়েছি পাড়ে। এখন তাও থাকছে না। এ অবস্থায় আমাদের ঘর-বাড়ি, জমিজমাসহ চৌহালী রক্ষা বাঁধটিও হুমকির মুখে পড়েছে। যদি উত্তর পাশে দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে আর কিছুই থাকবে না। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, কুকুরিয়া হতে স্থলচর পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার এলাকা রক্ষায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রতিরোধ কাজ হবার কথা। কিন্তু টেন্ডার প্রক্রিয়ায় গিয়ে থমকে রয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রী ও পানি সম্পদ মন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাই আমাদের বাঁচান। নদী ভাঙন প্রতিরোধ করুন।
ভাঙন তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ জানান, আমরা নৈতিকতায় যথাযথ তদারকি করে বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ করছি। তবে বাঁধের উত্তর এলাকায় পানি বৃদ্ধিতে ভাঙন শুরু হওয়ায় সেখানে প্রতিরোধে ১৮ কোটি টাকার প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। দ্রুত টেন্ডার হলে এলাকা যেমন রক্ষা পাবে তেমনি নতুন বাঁধটিও ঝুঁকির মধ্যে থাকবে না।