প্রধান মেনু

২মাসেও উদ্ধার হয়নি শৈলকুপার পদ্মনগর গ্রামের অপহৃত স্কুল ছাত্রী ডরিন

শামীমুল ইসলাম শামীম, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ১১নং আবাইপুর ইউনিয়নের পদ্মনগর গ্রামের বাসিন্দা ও কৃপালপুর আবু আহম্মেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেনীর ছাত্রী দীর্ঘ ২মাসেও উদ্ধার হয়নি অপহৃত স্কুল ছাত্রী ডরিন (১৫)। এ ঘটনায় ডরিনের পিতা মোঃ আলমগীর হোসেন বাদশা বাদী হয়ে ২জনসহ অজ্ঞাত আরো দুই/তিনজনকে আসামী করে শৈলকুপা থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন। শৈলকুপা থানায় দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা যায়, আবাইপুর ইউনিয়নের কৃপালপুর আবু আহম্মেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী ডরিন গত ২১ আগষ্ট ২০১৮ তারিখ মঙ্গলবার সকালে নিজ বাড়ী হইতে প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে একই গ্রামের ইকবাল আতাহার কাচারীতে শিক্ষক সন্ধিসঢ়;জত কুমারের কাছে যাওয়ার সময় অপহৃত হয়।

এ ঘটনায় ডরিনের পিতা ঘটনার দিন শৈলকুপা থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন।যাহার শৈলকুপা থানার মামলা নং-১৭ তাং ২১/০৮/২০১৮।ধারা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০ (সেঃ শোধনী ০৩)এর ৭/৩০ ধারায়। মামলার আসামীরা হলো, পদ্মনগর গ্রামের বিদেশ প্রবাসি নজরুল ইসলাম মোল্যার ছেলে সাজন(২৩) ও চররুপদাহ গ্রামের মৃত আঃ বারিক বিশ্বাসের ছেলে রান্নু(৪৫)সহ আরো ২/৩জন। এলাকাবাসির বিভিন্ন সময় কতোফ-কথনের মাধ্যমে ডরিনের পিতা জানতে পারেন তার সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের মদদে এবং তাদের সহযোগিতায় ডরিনকে হত্যা করে গুম করা হতে পারে।আসামীরা ডরিনের পিতাকে প্রায় মামলা প্রত্যাহারের জন্য বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে বলে তিনি জানান।

এদিকে প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হলেও ডরিনকে খুজে না পাওয়ায় তার মাতা বাধ্য হয়ে ঝিনাইদহের আদালতে আরেকটি গুম-হত্যার মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান ডরিনের মাতা পারভীন বেগম। ডরিনের পিতা বাদশা জানান, তার মেয়ে ২০১৮ সালের জেএসসি পরীক্ষার্থী। দীর্ঘদিন ধরে তার নাবালিকা মেয়েকে স্কুলে যাতায়াতের সময় চররূপদাহ গ্রামের সাজন মোল্লা প্রায় উত্যক্ত ও বিভিন্ন কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিলো। এ বিষয়ে সাজনের পরিবারকে অবহিত করা হলেও তারা কোন কর্ণপাত করেন নায়। এ বিষয়ে গ্রাম্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়।এরপরও সাজন প্রতিনিয়তই তার নাবালিকা মেয়েকে উত্যক্ত করেই আসছিলো।

গত ২১ আগষ্ট ইদের আগের দিন মঙ্গলবার সকালের দিকে তিনি বাড়ীতে না থাকার সুযোগে লম্পট সাজন, নিজ বাড়ী হইতে প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলে রাস্তা হতে তার মেয়েকে দুইটি মটরসাইকেল যোগে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাদেরকে আর খুজে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় সাজনের পরিবারের সম্পৃক্ততা থাকায় ঐদিনই তারা স্ব-পরিবারে গা-ঢাকা দেয়। অনেক খুজাখুজি করে মেয়েকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে বাদশা আইনের স্বরনাপন্ন হন। অসহায় পিতা বাদশা তার নাবালিকা মেয়েকে ফিরে পেতে আদালত ও পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন মানুষের দ্বারে দ্বারে ছুটে বেড়াচ্ছেন।

এদিকে এ বিষয়ে গত ০৯ সেপ্টেম্বর রবিবার জেলা আইন শৃংঙ্খলার মিটিংয়ের সভাপতি জেলা প্রশাসককে, সিনিয়র সহকারি এসপি (হরিণাকুন্ডু-শৈলকুপা) সার্কেল তারেক আল মেহেদী এ ঘটনার বিষয়সহ ০৫/০৮/২০১৮ তারিখের নোটারী পাবলিকে বিবাহ সংক্রান্ত এ্যাফিডেভিট নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা আইন শৃংঙ্খলা মিটিংয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয় এবং সিদ্ধান্ত হয় যে নোটারী পাবলিক বিবাহ সংক্রান্ত এ্যাফিডেভিট গ্রহন যোগ্য নহে এবং বাল্য বিবাহ থেকে বিরত থাকার জন্য ঝিনাইদহ নোটারী পাবলিক এর দুইজন আইনজীবিকে উক্ত মিটিংয়ে আইন অমান্য করে বাল্য বিবাহ সংক্রান্ত এ্যাফিডেভিট পুনরায় যাতে না হয় সে বিষয়ে সর্তক্য করেন এবং ডরিনকে উদ্ধার পূর্বক আসামীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মাধ্যমে শাস্তির জন্য মিটিংয়ে উপস্থিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাসকে নির্দেশদেন।

পুলিশ এজাহার ভুক্ত ২নং আসামী অপহরন কারির মামা রান্নুকে গ্রেফতার করলেও সাথে সাথেই তিনি ছাড়া পান। সাজনের চাচা আওয়ামীলীগ নেতা জহুর ও মাতা সেলিনা বেগমকে গ্রেফতার করলেও অদৃশ্য কারনে তাদেরকে পুলিশ ছেড়ে দেয়। অপহরন ঘটনার বিষয়ে শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আয়ুুবুর রহমান জানান, অপহৃত অষ্টম শ্রেনীর স্কুল ছাত্রী ডরিনকে উদ্ধারের সর্বাক্তক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।আসামী গ্রেফতার সহ মেয়েকে উদ্ধারের তৎপরতা অব্যাহত আছে এবং
থাকবে।