২০১৮ সালে ১০০ ফুট চওড়া খাল খননের কাজ শেষ হবে — গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী

কুড়িল হতে বালু নদী পর্যন্ত ৩০০ ফুট প্রশস্ত রাস্তার দুই পাশে ১০০ ফুট চওড়া খাল খননের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। ২০১৮ সালের মধ্যে এ খাল খননের কাজ শেষ করা হবে। খনন কাজ শেষ হলে নিকুঞ্জ, জোয়রসাহারা, ডিওএইচএস, ঢাকা সেনানিবাস, বিমানবন্দর, কালাচাঁদপুর, কুড়িল ও কুড়াবাড়ির জলাবদ্ধতা দূর হবে।
আজ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন খাল খননেন অগ্রগতি পরিদর্শনকালে এ কথা বলেন। তিনি কর্মরত প্রকৌশলীদের কাজের গুণগতমান বজায় রাখার নির্দেশ দেন।
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)-এর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান, সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফতেখার আনিস, রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী (বাস্তবায়ন) এ এস এম রায়হানুল ফেরদৌস, প্রধান প্রকৌশলী (প্রকল্প ও ডিজাইন) মো. আনোয়ার হোসেন এবং সেনাবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল নিজাম উদ্দীনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
গণপূর্ত মন্ত্রী বলেন, বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি নামার পথ না থাকায় ঢাকা মহানগরীর বিপুল অংশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সেই জলাবদ্ধতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ খালখনন করা হচ্ছে। এটি নিছক কোন খাল নয়। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ঢাকা শহরের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের জলাবদ্ধতা দূর হবে। এ খালকে নান্দনিকভাবে সাজানো হবে এবং নগরবাসীর জন্য স্বস্তিকর একটি কেন্দ্রে পরিণত হবে।
পরিদর্শনকালে জানানো হয় যে, প্রকল্পের আওতায় ১৩ দশমিক ৬৪ কিলোমিটার খালের সাথে ১৩ কিলোমিটার সার্ভিস রোড, ৩৯ কিলোমিটার পায়ে হাঁটার পথ, চারটি ইউলুপ, ১৩টি আর্চ ব্রিজ, চারটি এক্সপ্রেসওয়ে ফুটওভারব্রিজ, ১৬টি পথচারী ব্রিজ, ২৬ হাজার লিনিয়ার মিটার এসএস পাইপসহ ফেন্সিং, একটি পাম্প হাউস, ২২৭০টি স্ট্রিটলাইট, ১২টি ওয়াটার বাসস্টপ, স্ট্রম সয়ার লাইন, বোয়ালিয়া খালের উভয় পাশে ওয়াকওয়েসহ খালখনন ও বাঁধনির্মাণ, ১৩ কিলোমিটার ঘাস ও গাছ লাগানো, ১৩ কিলোমিটার সীমানা প্রাচীর, পাঁচটি স্লুইসগেট ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। এজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫,২৮৬ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এ খাল খননের জন্য প্রায় ৯০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সরকারি অর্থায়নে রাজউকের এ প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে।
পরে মন্ত্রী পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এবং উত্তরা তৃতীয় পর্বের ১৮ নম্বর সেক্টরে অ্যাপার্টমেন্ট প্রকল্প পরিদর্শন করেন। তিনি কাঞ্চন ব্রিজের কাছে পূর্বাচল প্রকল্পের লেক খনন কাজ পরিদর্শন করেন। লেকের খনন কাজ শেষ হওয়ায় মন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। এ লেকের পাশে কাঞ্চন ব্রিজের মাথায় খোলা চত্বরে তিনি দৃষ্টিনন্দন একটি স্থাপনা নির্মাণের নির্দেশ দেন। মন্ত্রী পূর্বাচলের ভেতরে বিভিন্ন রাস্তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন পরিদর্শন করেন। এ সময় জনৈক ব্যক্তির নির্মাণাধীন তিনতলা একটি বাড়ি অনুমোদিত নক্শা পরিবর্তন করায় তা ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, পূর্বাচল হবে দেশের প্রথম স্মার্ট সিটি। এখানে ভবন নির্মাণে কোন প্রকার ত্রুটি বা ইচ্চাকৃত বিচ্যুতি ক্ষমা করা যাবে না। উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরে নির্মাণাধীন অ্যাপর্টমেন্ট প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ও গুণগত মানে মন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি দ্রুত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেন, যাতে স্বাধীনতার মাসে এটির সকল কাজ শেষ করে উদ্বোধন করা যায়।