আশুলিয়ায় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্যসহ আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৩ সদস্য আটক

সিরাজুল ইসলাম , সাভার:
আশুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা বাস, ট্রাক ডাকাত দলের ৩ সদস্যকে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্যসহ আটক করেছে র্যাব-৪। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশী রিভলভার, ৬ রাউন্ড গুলি, ১ শ‘ ৮০ পিস ইয়াবা, ৩টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নয়ারহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের এ ৩ সদস্যকে আটক করা হয়। র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত দলের কয়েকজন সদস্য পালিয়ে যায়।
আটককৃতরা হলো-হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থানার আদিত্যপুর গ্রামের জনিক মিয়ার ছেলে ফখরুল কবির শান্ত (২৩)। বর্তমানে সে সাভার পৌর এলাকার শাহীবাগ মহল্লার তালুকদার ভিলায় ভাড়া থেকে বসবাস করে। কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর থানাধীন কায়ামারিয়া গ্রামের আশরাফুলের ছেলে অনিক ইসলাম হৃদয় (২৩)। সে সাভারের রাজফুলবাড়িয়া এলাকার মুজিবের বাসায় ভাড়া থাকে। এছাড়া সাভারের রাজফুলবাড়িয়া নগরচর গ্রামের হামিদ মিয়ার ছেলে দেলোয়ার হোসেন দুলু (১৯)।
মঙ্গলবার সকালে র্যাব-৪ আশুলিয়ার নবীনগর ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর আব্দুল হামিদ জানান, ২২ মে ভোর রাতে গাজীপুরের চৌরাস্তা এলাকার একটি ফিলিং স্টেশনে পার্কিং করা একটি বাস ১৫/১৬ জনের একটি দল ডাকাতি করে। পরে বাসের মালিক শামীম, হেলপার সুজনকে হাত-পা, বেঁধে গাড়ির সিটে ফেলে রাখে ডাকাত দলের সদস্যরা। পরে চন্দ্রা, নবীনগর, মির্জাপুর থেকে যাত্রী তুলে তাদের জিম্মি করে মালামাল ও নগদ টাকা লুটে নেয়। এরপর তারা ঈশ^রদি থানার পাশে যাত্রী তুলে ডাকাতির সময় গাড়ির চালক ও হেলপার কৌশলে জানালা দিয়ে ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার করলে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। এ ঘটনায় কয়েকজন ডাকাত সদস্যকে আটক করলেও বাকিরা পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে ঈশ^রদী থানায় একটি মামলা দায়েরের পর প্রযুক্তির ব্যবহার ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের অবস্থান আশুলিয়ার নয়ারহাট এলাকায় নিশ্চিত হয়ে মঙ্গলবার সকালে র্যাব-৪ এর একটি অভিযানিকদল অভিযান চালায়। ঘটনাস্থল থেকে ৩ ডাকাত সদসকে ১টি বিদেশি রিভলভার, ৬ রাউন্ড গুলি, ১ শ‘ ৮০ পিস ইয়াবা ও ৩টি মোবাইলফোন সেটসহ আটক করা হয়।
তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্যরা ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে। এছাড়া ২৫/২৬ সদস্যের একটি ডাকাতচক্র রয়েছে। তারা মহাসড়কের পাশে পার্কিং করা বাস, ট্রাক টার্গেট করে চালক, হেলপারদের জিম্মি করে ডাকাতি করে। এছাড়া তারা বাসের চালক, হেলপারদের মারধর, হাত-পা. মুখ বেঁধে পিছনের সিটে ফেলে রেখে নিজেরাই গাড়ি চালিয়ে যাত্রী উঠা-নামা করায়। পরে সুযোগ বুঝে নিরিবিলি স্থানে নিয়ে যাত্রীদের সব কিছু রেখে গাড়ি থেকে ফেলে দেয়। শুধু তাই নয়, নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির মত ঘটনা ঘটায় তারা।
এভাবে ডাকাত দলের সদস্যরা ঢাকা, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, পাবনা ও বগুড়াসহ আশপাশের জেলাসমূহে এ পর্যন্ত ৮০/৯০টি ডাকাতির কথা স্বীকার করেছে ধৃত ডাকাত সদস্যরা। চক্রটির বাকি সদস্যদের আটকের জন্যে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও র্যাবের এ কর্মকর্তা জানান।
জানতে চাইলে, আশুলিয়া আটককৃতদের আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল আউয়াল জানান, আটককৃতদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।