বার্লিনে বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৪ উদযাপন

বার্লিন, ১৭ মার্চ: বার্লিনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় এবং বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২৪ উদ্যাপিত হয়েছে। ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ধরে, আনব হাসি সবার ঘরে’- এই প্রতিপাদ্যে উদযাপিত অনুষ্ঠানে দূতাবাসে কর্মরত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি, তাদের পরিবারবর্গ ও শিশু ও কিশোররা উপস্থিত ছিলেন।
দিবসের শুরুতে রাষ্ট্রদূত মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর উপস্থিতিতে জাতীয় সংগীত বাজানোর মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সাথে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এরপর দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের উপস্থিতিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রেরিত জাতীয় নেতৃবৃন্দের বাণীসমূহ পাঠ করা হয়। অনুষ্ঠানের পরবর্তী পর্যায়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশব, তাঁর সংগ্রামমুখর জীবন, কর্ম, আদর্শ এবং একটি স্বাধীন দেশ গঠনে তাঁর ভূমিকার ওপর আলোচনা ও তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতি, রাষ্ট্রদূত বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর সংক্ষিপ্তভাবে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ টুঙ্গিপাড়ার নিভৃতপল্লিতে জন্ম নেওয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বেড়ে ওঠা ছিলো বর্ণিল ও চমকপ্রদ। গ্রামের কাদা-জল, মেঠোপথ আর প্রকৃতির খোলামেলা পরিবেশে বেড়ে ওঠা বঙ্গবন্ধু শৈশব থেকেই ছিলেন অত্যন্ত মানবদরদি কিন্তু অধিকার আদায়ে আপসহীন। ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন প্রখর বুদ্ধিমত্তার অধিকারী, প্রকাশ পেয়েছিলো অসামান্য নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলি। পরিণত বয়সে তিনি হয়ে ওঠেন সমগ্র বাঙালির মুক্তির অগ্রদূত, গণতন্ত্রের প্রতিমূর্তি। রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন যে, জাতির পিতা মনে প্রাণে বিশ্বাস করতেন, শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। শিশুরা যেন উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে সে লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তিনি আরও বলেন যে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নেতৃত্বের গুণাবলী ধারণ করে তাঁর কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের জন্য অর্থনৈতিক মুক্তির পাশাপাশি শিশুদের সুনাগরিক এবং দেশপ্রেমিক হয়ে বেড়ে উঠতে যা যা প্রয়োজন তার সবকিছুই নিশ্চিত করছেন। তাই শিশুদের সুন্দর ভবিষ্যৎ ও কল্যাণে আমাদের বর্তমানকে উৎসর্গ করে সকলে মিলে জাতির পিতার অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ, স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে দল-মত নির্বিশেষে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
পরিশেষে, বাংলাদেশ যত দিন থাকবে, বাংলা ভাষা যত দিন থাকবে, বাঙালি যত দিন থাকবে, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা যত দিন প্রবাহিত থাকবে, বাঙালির হৃদয়ে আবেগ-অনুভূতি ও উত্তাপ যত দিন থাকবে, ততোদিন বঙ্গবন্ধু, তাঁর আদর্শ, কর্ম ও জীবন আমাদের সকলের জন্য প্রেরণার বাতিঘর হয়ে থাকবে।