প্রধান মেনু

৭ মার্চের ভাষণ এক অমর বাণী—খাদ্যমন্ত্রী

নওগাঁ, ২২ ফাল্গুন (৭ মার্চ) : খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ এক অভাবনীয় অমর বাণী। ১৮ মিনিটের এই ভাষণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছিলো, জাতিকে একত্রিত করেছিলো। এই ভাষণে তিনি বলেছিলেন, হিন্দু-মুসলমান, বাঙালি-অবাঙালি সবাই আমরা ভাই ভাই। বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো। বঙ্গবন্ধুর এই দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্যেই বাঙালি জাতি উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালির বুকে আজও নাড়া দেয়। ৩০ লাখ শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই বাংলার আকাশে বাতাসে এখনও তা ধ্বনিত হয়। বঙ্গবন্ধুর অমর বাণী, এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম।

মন্ত্রী আজ নওগাঁ জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত সদর উপজেলা হলরুমে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবসের আলোচনা সভা ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও জয়বাংলা স্লোগান অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। জয় বাংলা মুক্তিযুদ্ধের স্পিড। বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের শেষ সময়ে বলেছিলেন জয় বাংলা। আর জয়বাংলা স্লোগান নিয়েই স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে। সেই জয় বাংলা স্লোগান আজকে অনেকেই মুখে আনতে চাই না। যদি বিপদ হয়; জয় বাংলা বলায় যদি কেউ চেপে ধরে; এটা যারা মনে করে; আমার মনে হয় তারা অজ্ঞ!

মন্ত্রী বলেন, দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন সোনার বাংলা গড়ার। যুদ্ধবিধ্বস্ত সে দেশটাকে মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট তৈরি করে যোগাযোগ স্থাপন, মানুষকে খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করেছিলেন। যখন বঙ্গবন্ধু প্রতি মহাকুমাতে একজন করে জেলা গভর্নর পদ তৈরি করে এই দেশটাকে সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ করার আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন; ঠিক সেই মুহুর্তে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কাল রাত্রিতে তাকে হত্যা করা হয়। আমরা সেই অকৃতজ্ঞ জাতি, অভিশপ্ত জাতি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে স্বাধীনতার লাল সূর্যকে হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার কণ্ঠ মাইক বা টেপ রেকর্ডার কোথাও আমরা শুনতে পাই নাই। হত্যার বিচার যেন না হয় তার জন্য তার রচিত সংবিধানকে কেটে ছিঁড়ে বিচারকাজ বন্ধ করে দিয়ে; স্বাধীনতা যুদ্ধাপরাধীদেরকে মন্ত্রী বানিয়ে; তাদের গাড়িতে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে রঞ্জিত লাল সবুজের পতাকা তুলে দেয়া হয়েছিল।

সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, বাংলাদেশ তাদের কারণে অভিশপ্ত হয়েছিল; তখন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তি আসে নাই। এদেশে হাহাকার ছিল, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ছিল না, অভাবী দেশ ছিল, বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়েছিল। তিন বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। সেই তলাবিহীন ঝুড়ির বাংলাদেশে এখন আর কেউ অভাবী নেই। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার যে প্রয়াস ছিল তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করে যাচ্ছেন। বাঙালি জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি এবং বাঙালি জাতিকে অভিশাপমুক্ত করেছেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে এবং জাতির পিতার হত্যার বিচার করে।

এ সময় মন্ত্রী নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে বলেন, বঙ্গবন্ধুর উপর অনেক বই বের হয়েছে সেগুলো বেশি বেশি পড়তে হবে। সেটাও যদি না পড়ো তাহলে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী ও কারাগারের রোজনামচা বইগুলো পড়ার চেষ্টা করো; জীবনে অনেক কিছু শিখতে পারবে, জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারবে।

এসময় জেলা প্রশাসক মোঃ হারুন অর রশীদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাকিবুল আকতার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি), জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হারুন অর রশীদ, সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর শরীফুল ইসলাম খান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামসহ প্রমুখ।