প্রধান মেনু

৩০ ডিসেম্বর গণতন্ত্র রক্ষা দিবস —তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেছেন, ‘আজ ৩০শে ডিসেম্বর হচ্ছে গণতন্ত্র রক্ষা দিবস। কারণ এক বছর আগে আজকে যদি নির্বাচন না হতো, তাহলে গণতান্ত্রিক ধারা ব্যাহত হতো। বিএনপি, ঐক্যফ্রন্ট ও তাদের অন্য দোসররা চেয়েছিল গতবছর ৩০ শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচন ভণ্ডুল করতে। অর্থাৎ তারা সেদিন গণতন্ত্রকে হত্যা করতে চেয়েছিল।’ আজ রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ‘মাদ্রিদ জলবায়ু সম্মেলন পর্যালোচনা ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতার পূর্বে ‘বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ৩০শে ডিসেম্বরকে গণতন্ত্র হত্যা, কালো দিবস পালন করছে’ –এ বিষয়ে সাংবাদিকরা মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচন ভণ্ডুল করার পাঁয়তারা সত্ত্বেও সমস্ত প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিল এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিপুল বিজয় অর্জন করেছিল। সেজন্য আজকে হচ্ছে গণতন্ত্র রক্ষা দিবস।’ তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) যে দিবসটি পালন করতে চাচ্ছে, আসলে প্রকারান্তরে তারা নিজের খোলসটাই উন্মোচন করে দিয়েছে। তারা যে গণতন্ত্র হত্যা করতে চেয়েছিল, সেটি তারা করতে পারছে না।’

এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘গতকাল আমরা দেখেছি, তারা (ঐক্যফ্রন্ট) দেড়শ’ জনের বিশাল মিছিল নিয়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে। বিরাট ঐক্যফ্রন্ট অনেকগুলো দল- সবগুলো দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও সেখানে ছিলেন তাদের মিছিলে। আর সব মিলে শ’দেড়েক মানুষ ছিল তাদের মিছিলে। তাদের প্রতি জনসমর্থন কোন জায়গায়, এতেই বোঝা যায়। বাংলাদেশের মিছিল কি দেড়শজনের হয়? সুতরাং এই লজ্জা ঢাকার জন্য তারা যে সমস্ত কথা বলছেন, সেগুলো অবান্তর কথাবার্তা।’

‘বাংলাদেশে প্রকৃতপক্ষে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে তারা গণতন্ত্র হত্যা করতে চেয়েছিল, কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন তারা যখন রাজনৈতিকভাবে আমাদেরকে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে, তখন তারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কিন্তু এই সমস্ত ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে না, কারণ দেশের মানুষ তাদের সাথে নাই।’ ‘বিগত কয়েকদিন আগে প্রতিনিয়ত বিএনপি অফিসের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ হচ্ছে’ – এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলে ড, হাছান বলেন, ‘আমরা অতীতেও দেখেছি, বিএনপি যখন কোনো সমাবেশ ডাকে, কিংবা কোনো আন্দোলনের ডাক দেয়, তখন তারা মানুষের ওপর পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেছে, বোমা নিক্ষেপ করেছে, নিজেরা নিজেরা মারামারি করেছে।

এগুলো তাদের আভ্যন্তরীণ কোন্দল ছাড়া অন্য কিছু নয় বলে আমি মনে করি। নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়ন এক বছরে নির্বাচনী ইশতেহার কতটুকু বাস্তবায়ন করেছেন- এমন প্রশ্নর জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচনের ইশতেহার পাঁচ বছরের জন্য দেয়া হয়। আমি মনে করি যে, এক বছরে আমরা যেটুকু সফলতা অর্জন করার লক্ষ্য স্থির করেছিলাম, তার চেয়ে বেশি অর্জন করেছি। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সাঈদ খোকন বাদ পড়েছে- এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড. হাছান বলেন, ‘জয়লাভের জন্য যে প্রার্থীকে দল যোগ্য মনে করেছে, জনগণের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য মনে করেছে, তাকেই মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।’

‘মাদ্রিদ জলবায়ু সম্মেলন পর্যালোচনা ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ সেমিনারে তথ্যমন্ত্রী বাংলাদেশ কাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম (বিসিজেএফ) আয়োজিত ‘মাদ্রিদ জলবায়ু সম্মেলন পর্যালোচনা ও ভবিষ্যৎ করণীয়’ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী ও পরিবেশ গবেষক ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় যুগান্তকারী ভূমিকার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চ্যাম্পিয়ন্স অভ্ দ্য আর্থ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। মাদ্রিদ সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা বিষয়ে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না হলেও বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা বৃদ্ধি করেছে।

এ বিষয়টি শুধু মানবজাতির জন্য নয়, পুরো পৃথিবী এবং সকল প্রাণের অস্তিত্বের সাথে যে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে আছে, সেটি মনে রাখলেই আমরা আরো পরিবেশবান্ধব হতে পারবো, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলাও সহজতর হবে।’ ইনস্টিটিউশন অভ্ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ- আইডিইবি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি এ কে এম এ হামিদের সভাপতিত্বে ও বিসিজেএফ সভাপতি কাওসার রহমানের সঞ্চালনায় সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। উপমন্ত্রী তার বক্তৃতায় মাদ্রিদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে স্মরণীয় বলে বর্ণনা করেন।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন আইডিইবি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ শামসুর রহমান, সূচনা বক্তব্য দেন বিসিজেএফ এর সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক জিয়াউল হক ও মির্জা শওকত আলী। হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ড. সেলিম উদ্দিন, কোস্ট ট্রাস্ট প্রতিনিধি আমিনুল ইসলাম, কাইমেট চেঞ্জ প্রোগ্রামের সমন্বয়ক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান, পরিকল্পনা কমিশনের ন্যাশনাল রেজিলিয়েন্স প্রোগ্রামের প্রকল্প পরিচালক ড. নুরুন নাহার, জলবায়ু গবেষক ড. এম আসাদুজ্জামান আলোচনায় অংশ নেন।