২০৩০ সালের মধ্যে ভূমির অবক্ষয়মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে কাজ করছে সরকার —পরিবেশমন্ত্রী

ঢাকা, ১৯ ফাল্গুন (৪ মার্চ) : পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেছেন, পরিকল্পনা মোতাবেক টেকসই ভূমি ব্যবহার প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ভূমি অবক্ষয় শুন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে সমন্বিতভাবে কাজ করছে সরকার। রিও কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মরুময়তা রোধ, ভূমির অবক্ষয় ও খরা মোকাবিলা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে কাজ করছে। তিনি বলেন, ভূমি ব্যবহার মানচিত্র হালনাগাদকরণ, ভূমি অবক্ষয়ের কারণ ও সূচক চিহ্নিতকরণ, অবক্ষয় রোধে, প্রশমন বা পূণঃব্যবহারযোগ্যকরণের লক্ষ্যে টেকসই ভূমি ব্যবহারের তথ্য সংগ্রহ ও পরিকল্পনা প্রণয়নে প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর ভিত্তিতে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিশ্রুত অবক্ষয়মুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথচিত্র প্রণয়ন করবে সরকার।
আজ পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকায় ‘এস্টাব্লিশিং ন্যাশনাল ল্যান্ড ইউজ এন্ড ল্যান্ড ডিগ্রেডেশন প্রোফাইল টুওয়ার্ড মেইনস্ট্রিমিং সাসটেইনেবল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট প্রাকটিসেস ইন সেক্টর পলিসিস’ শীর্ষক প্রকল্পের তৃতীয় অন্তর্বর্তী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, দেশে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৬৯ হাজার হেক্টর আবাদী জমি অকৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য চলে যাচ্ছে। বাংলাদেশে ভূমির অবক্ষয় প্রক্রিয়ার প্রশমনের সূচক বা ক্ষেত্র নির্ধারণ এবং কার্যকরী পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন পরিকল্পনার জন্য একটি সমৃদ্ধ তথ্য ভান্ডার সৃজনের কাজ চলছে। সমন্বিত উদ্যোগের অংশ হিসেবে পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মৃত্তিকাসম্পদ উন্নয়ন ইনিস্টিটিউট, বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম অংশীদারীত্বের ভিত্তিতে কাজ করছে। অবক্ষয় রোধে ভূমিতে বিনিয়োগ হলে স্থানীয় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং এদেশের মানুষকে টিকে থাকার লড়াইয়ের সুযোগ করে দিবে, পক্ষান্তরে জাতীয় নিরাপত্তা শক্তিশালী করবে ও ভবিষ্যত উন্নয়ন টেকসই হবে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা যদি বর্তমান ভূমি ব্যবস্থাপনার জুতসই পরিবর্তন না করি তবে আগামীতে ঝুঁকির মধ্যে থাকা অধিক সংখ্যক দরিদ্র মানুষের অভিবাসী হওয়া ছাড়া অন্য কোন সুযোগ থাকবে না। জীবনযাপনের অত্যাবশ্যকীয় উপাদানের চাহিদা মিটাতে আরো সচেতনতার সাথে ভূমির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এলক্ষ্যে টেকসই ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতি ও ব্যবহারের আর্থিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত উপকারিতা সম্পর্কিত সচেতনতা বাড়াতে সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। আলোচ্য প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা কিছু মৌলিক তথ্য পাবো যার ভিত্তিতে আমরা এদেশের ভূমির অবক্ষয় মোকাবিলার ক্ষেত্র চিহ্নিত করে এগুতে পারবো।
পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এ কে এম রফিক আহাম্মদ এর সভাপতিত্বে কর্মশালায় মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, সচিব জিয়াউল হাসান, প্রকল্প পরিচালক ড মুহাম্মদ সোহরাব আলী, প্রকল্প সমন্বয়ক জালাল মোঃ সোয়েব বক্তব্য রাখেন। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিগণ কর্মশালায় মতামত ব্যক্ত করেন।