হ্যান্ডসেটের আইএমইআই ডেটাবেইজ চালু ডিজিটাল অপরাধ মোকাবিলায় ডিজিটাল প্রযুক্তির দরকার — মোস্তাফা জব্বার
মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেট আমদানিকারকদের আমদানি অনাপত্তি প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয় করা এবং আমদানিকৃত বা স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত সকল হ্যান্ডসেটের আইএমইআই ডেটাবেইজের যাত্রা আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করার মধ্য দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার আরো একটি মাইলফলক স্থাপিত হয়েছে।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আজ ঢাকায় বিটিআরসি মিলনায়তনে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সহায়তায় বিটিআরসি এই ডেটাবেইজটি স্থাপন করেছে।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী আইএমইআই ডেটাবেইজ চালুর ঘটনাটিকে চলমান ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অগ্রযাত্রায় এক ঐতিহাসিক অর্জন হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্য বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। গত দশ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে বিশাল সফলতার ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ডিজিটাল শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্বের জায়গায় পৌঁছেছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, সরকার ডিজিটাল ডিভাইস করছে। প্রত্যেকটি ডিভাইস নিরাপদ রাখার দায়িত্বও সরকারের। এখন যে কোনো গ্রাহক তার মোবাইল ফোন সেট নিরাপদে ব্যবহার করতে পারবেন। কেউ ফোন চুরি করে তা ব্যবহার করতে পারবেন না। গ্রাহকের তথ্যের ভিত্তিতে বিটিআরসি ওই সেটের আইএমইআই নম্বর সার্ভার থেকে বাদ দিয়ে দেবে। ফলে ওই সেটে নতুন কোনো সিম আর সচল হবে না। এতে ব্যক্তির নিরাপত্তা যেমন নিশ্চিত হবে, তেমনি সমাজ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তাও নিশ্চিত হবে।
পাশাপাশি সরকার অবৈধ সেট থেকে যে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব বঞ্চিত হতো এখন সেটা হবে না। মন্ত্রী দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিকাশে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদের অবদান উল্লেখ করে বলেন, প্রযুক্তি বিষয়ে তাঁর মেধা, তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ, ফোরজি চালু এবং ফাইভজি’র সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করাসহ ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশ ত্বরান্বিত করতে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
মন্ত্রী তথ্যপ্রযুক্তি খাতে তাঁর ৩১ বছরের কাজের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন, প্রতি ঘরে, প্রত্যেক মানুষকে ডিজিটাল কানেকটিভিটির আওতায় আনতে সরকার কাজ করছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশের ফলে ডিজিটাল অপরাধ বাড়ছে। প্রচলিত পদ্ধতিতে তা প্রতিরোধ করা সম্ভব না। ডিজিটাল অপরাধ মোকাবিলায় ডিজিটাল প্রযুক্তির দরকার। আইএমইআই ডেটাবেইজের ফলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। অবৈধ আমদানি হ্রাস করার মাধ্যমে এ খাত হতে বিপুল রাজস্ব আহরণ নিশ্চিত হবে। দেশের মোবাইল খাতের তথ্য উপাত্ত পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, প্রত্যেকটি মোবাইল ফোন সেটেই ১৫ ডিজিটের একটি আইএমইআই নম্বর থাকে। গ্রাহক *#০৬# ডায়াল করলেই এই আইএমইআই নম্বর ভেসে উঠে। এই নম্বরটি ১৬০০২ নম্বরে এসএমএসের মাধ্যমে পাঠালে ফিরতি এসএমএসে জানা যাবে সেটটি বৈধ না অবৈধ। বর্তমানে প্রাহকের হাতে থাকা সবগুলো সেটই ডেটাবেইজে উঠে গেছে।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস এবং বিটিআরসি চেয়ারম্যান মোঃ জহিরুল হক বক্তৃতা করেন।