সোনার বাংলা গড়তে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে — আইনমন্ত্রী

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গ নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও আইন সভার কাজের ধরন আলাদা হলেও সবার আসল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন এবং সেটি হচ্ছে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করা। এই সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় সকলকে এক প্রেরণায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলা গড়ার অন্যতম অনুষঙ্গ আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় বিচারকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য।
কেবল আইনের শাসন নয়, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, গণতন্ত্র সুসংহতকরণ এবং দারিদ্র্য দূরীকরণেও বিচারকদের তথা কোয়ালিটি জুডিসিয়ারির ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই জনগণকে কোয়ালিটি জুডিসিয়ারি উপহার দেওয়ার লক্ষ্যে সরকার বিচার বিভাগকে সবধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। আজ ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজ ও সমপর্যায়ের বিচারকদের জন্য আয়োজিত ৪০তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রশিক্ষণার্থী বিচারকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, সমাজে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় পেশাগত জীবনে অন্যের অনুসরণীয় হওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
বিচার সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সততার ভিত্তিতে চারিত্রিক দৃঢ়তা ও স্বচ্ছতা হতে হবে কর্মজীবনের মূলমন্ত্র। বিন্দুমাত্র লোভ কিংবা অসততার কারণে বিচার বিভাগ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মাঝে যাতে কোনো হতাশা বা বিরূপ ধারণার সৃষ্টি না হয় সেদিকে তাঁদের খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, আপনাদের বিচারক হয়ে ওঠার পেছনে এ দেশের গরীব-দুঃখী-মেহনতি মানুষের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ অবদান রয়েছে। তাঁদের কর্মক্ষেত্রই হল বিচারপ্রার্থী এসব মানুষের শেষ ভরসাস্থল। তাই জনগণের দ্রুত ও সহজে ন্যায়বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। নিছক গতানুগতিক বা দায়সারা ভাব পরিহার করে কর্মক্ষেত্রে সৃষ্টিশীলতার পরিচয় দিতে হবে।
আনিসুল হক বলেন, সরকার আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি সেবার সাথে বিচারক ও বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের সমান তালে এগিয়ে নিতে চায় এবং সরকারি আইনি সেবার মানোন্নয়নের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে এমন একটি রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চায় যেখানে সকল মানুষ তার আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রীয় সেবাসমূহ সহজেই গ্রহণ করতে পারবেন। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে দুই হাজার ৬৯০ কোটি টাকার ই-জুডিশিয়ারি প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। বিচারকদেরকে এখন থেকেই তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে বিচারিক সেবা প্রদানের প্রস্তুতি নিতে হবে।
তিনি বলেন, এডিআর বা মধ্যস্থতার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তাই প্রশিক্ষণ থেকে মধ্যস্থতার মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তির কৌশলগুলো ভালোভাবে জানতে হবে। বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আইন সচিব মোঃ গোলাম সাওয়ার বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।