সৈয়দপুরে ৩ দিন থেকে বিদ্যুৎ নেই, চরম জনদূভোগ দ্রুত সরবরাহের দাবিতে এলাকাবাসীর মহাসড়ক অবরোধ
নীলফামালী সংবাদদাতা ॥ নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের নিয়ামতপুর আদানী মোড় এলাকায় বিগত ৩ দিন থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় চরম দূর্ভোগে পড়েছে এলাকাবাসী। বিদ্যুৎ সরবরাহ দ্রুত নিশ্চিত করতে বার বার বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করা হলেও তারা এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ না নেয়ায় বাধ্য হয়ে সড়ক অবরোধ করেছে। দীর্ঘ ৩ ঘন্টা সৈয়দপুর-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করায় উভয়পাশে প্রায় শতাধিক বাস-ট্রাক, দূরপাল্লার মটরযানসহ সব ধরণের যানবাহন আটকা পড়ে। এতে চরম দূরাবস্থায় পড়ে এপথে চলাচলকারী যাত্রীসহ সাধারণ মানুষ। পরে পুলিশের সহযোগিতায় এবং দ্রুততম সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ সমস্যা সমাধানের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে অবরোধ তুলে নেয় এলাকাবাসী। ১৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুর ১ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত এ সড়ক অবরোধ কর্মসূচী পালনকালে বক্তব্য রাখেন হাজী মনজুর রহমান, জাহিদুল ইসলাম, মাসুদ, জাহাঙ্গীর প্রমুখ।
তারা এসময় অভিযোগ করে বলেন, গত ১৫ এপ্রিল রাত আনুমানিক ১২টার পর সৈয়দপুরের উপর দিয়ে প্রচন্ড ঝড় বয়ে যায়। এতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি-ঘর, গাছ-পালা, বিদ্যুতের খুটি ও তার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ফলে সেসময় থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়ে। পরের দিন পুরো উপজেলা জুড়ে বিদ্যুৎ ছিলনা। এতে অসহ্য দুর্ভোগ পোহাতে হয় উপজেলাবাসীর। কিন্তু গত ১৭ এপ্রিল বুধবার থেকে উপজেলার সব জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হলেও বাস টার্মিনাল থেকে আদানী মোড়সহ আশপাশের এলাকায় প্রায় ৩ শতাধিক বাড়িতে এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ নেই।
এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করা হলে তারা কোন কর্ণপাত করছেন না। ফলে বাধ্য হয়ে আমরা পথে নেমেছি। কারণ বিদ্যুৎ অফিস টার্মিনালের বিলবোর্ড ভাঙ্গার অজুহাতে সম্পূর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ টার্মিনালের বিলবোর্ড ভাঙ্গার আশে পাশেও বিদ্যুৎ আছে। এ বিষয়ে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী (নেসকো) লিমিটেড এর সৈয়দপুর বিক্রয় ও বিতরণ অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, মূলত: বাস টার্মিনাল এলাকায় একটি বিশালাকৃতির বিলবোর্ড ছিল। যাতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বর্তমান সরকারের আমলে বাস্তবায়িত বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরে বৃহৎ একটি ব্যানার টানানো ছিল। গত ১৫ এপ্রিল রাতের বৈশাখী ঝড়ে বিদ্যুতের তারের উপর ভেঙ্গে পড়ে। একারণে বাস টার্মিনাল থেকে আদানী মোড় পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
এই বিলবোর্ডটি অপসারণের জন্য প্রয়োজনীয় ক্রেন অত্রাঞ্চলের কোথাও নেই। তাই সুদূর ঢাকা থেকে ক্রেন আনতে বিলম্ব হওয়ায় দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিভাগের দোষ কোথায়? প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের উপর কারও হাত নেই। তা না হলে আমরা কোন ভাবেই নিশ্চুপ বসে থাকতাম না। এই বিলবোর্ডটি সম্পূর্ণ অপরিকল্পিতভাবে স্থাপন করা হয়েছে। আর তা স্থাপনে পৌরসভা অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু সে ব্যাপারে জনগণ পৌর কর্তৃপক্ষ বা বিলবোর্ড স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে অহেতুক বিদ্যুৎ বিভাগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। যা কোন সচেতন নাগরিকের কাজ হতে পারেনা। সে যাই হোক আজ (১৮ এপ্রিল) বিকাল ৪টায় ক্রেন এসে পৌছেছে। আর মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বিদ্যুৎ পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।