প্রধান মেনু

সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগাতে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে নরওয়ে

ঢাকা, ২৬ আশ্বিন (১১ অক্টোবর):  শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্রসীমা সুনীল অর্থনীতির বিরাট সম্ভাবনা তৈরি করেছে । এর ফলে সমুদ্র সম্পদকেন্দ্রিক ব্যাপক শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং ড্রাইফিশ শিল্পের প্রসারে নরওয়ের প্রযুক্তি সহায়তা কামনা করেন। একই সাথে তিনি পরিবেশবান্ধব সবুজ শিল্পায়নের লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশে শিল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নরওয়ের সহায়তা অব্যাহত রাখার তাগিদ দেন।

আজ শিল্প মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার-ভেন্ডসেন এর সাথে বৈঠককালে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এ কথা বলেন। বৈঠকে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতিতে সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা কাজে লাগানোর কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এছাড়া, জাহাজ পুন:প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের উন্নয়নে নরওয়ের কারিগরি সহায়তা, এ শিল্পে কর্মরত জনবলের প্রশিক্ষণ, সামুদ্রিক আবর্জনা (Marine Litter) ও শিল্পবর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সামুদ্রিক মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, আধুনিক প্রযুক্তিতে শুঁটকীমাছ সংরক্ষণসহ অন্যান্য
বিষয় আলোচনায় স্থান পায়।

বাংলাদেশে পরিবেশবান্ধব জাহাজ পুন:প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের উন্নয়নে নরওয়ের সাথে দীর্ঘদিনের কারিগরি সহযোগিতা উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, এর ফলে বাংলাদেশের জাহাজ পুন:প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প ক্রমেই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করছে। তিনি এ শিল্পের শ্রমিক ও জনবলের দক্ষতা বাড়াতে নরওয়ে থেকে প্রশিক্ষক ও কারিগরি সহায়তা বাড়ানোর জন্য রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

বাংলাদেশে সুনীল অর্থনীতির বিশাল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার-ভেন্ডসেন বলেন, সমুদ্র সম্পদ আহরণে ঐতিহ্যগতভাবে নরওয়ের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে লাভবান হতে পারে। নরওয়ের রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের জাহাজ পুন: প্রক্রিয়াজাত করণ শিল্পের উন্নয়নে নরওয়ে বিগত দশ বছর ধরে সহযোগিতা করে আসছে। ফলে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে এ শিল্পের ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। তিনি এ শিল্পের আধুনিকায়ন, সমুদ্র সম্পদ আহরণ, সামুদ্রিক মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, ড্রাইফিশ শিল্প স্থাপন এবং সমুদ্র ও শিল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নরওয়ের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানান। শিল্পমন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূতের বৈঠক এর আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ রেজা নাফার শিল্পমন্ত্রীর সাথে তাঁর দপ্তরে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাতকালে তাঁরা দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন।

এসময় ইরানের রাষ্ট্রদূত করোনা মহামারি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহিত উদ্যোগের ভূঁয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, চলমান মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক অর্জন প্রশংসনীয় ও অনুকরণীয়। তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয়দানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, মুসলিম ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ হিসেবে ইরানের সাথে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্ক বিদ্যমান। এ সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে বাংলাদেশ আন্তরিক। তিনি অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি শিল্পখাতে দ্বিপাক্ষিক সহায়তার ক্ষেত্র চিহ্নিত করে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেয়ার জন্য রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ ধরণের প্রস্তাব পেলে বাংলাদেশ তা যথাযথ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।