সাভারে দুর্ধর্ষ গাংচিল বাহিনীর প্রধানসহ তিনজন আটক

জাহিদুল ইসলাম অনিক, সাভার প্রতিনিধি: সাভারে গেল কয়েক বছর আগে পুলিশ কর্মকর্তা ও র্যাব কর্মকর্তা হত্যার ঘটনায় গাংচিল বাহিনীর প্রধান সালাউদ্দিন ওরফে এমপি সালাউদ্দিনসহ তিনজনকে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব-৪। শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সাভারের আমিনবাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করে র্যাব ৪ এর সদস্যরা।
র্যাব ৪ এর সহকারী পুলিশ সুপার জিয়াউর রহমান চৌধুরী জানান, শুক্রবার বিকেলে সাভারের আমিনবাজারের সালেহপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশী পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগজিন, ১৯০ গ্রাম হিরোইন, ৫০০ পিচ ইয়াবা ও দেশীয় অস্ত্রসহ দুর্ধর্ষ গাংচিল বাহিনীর প্রধান সালাউদ্দিন ও তার দুই সহযোগীকে আটক করা হয়। দুর্ধর্ষ গাংচিল বাহিনী ২০০২ সালে আমিনবাজার এলাকার পাশে সাভার থানার ১ জন এসআই কে হত্যা, ২০০৭ সালে ২ জন র্যাব সদস্যকে হত্যা, দিয়াবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির অস্ত্রলুট এবং আমিন বাজার এলাকায় নৌ-টহল দলের অস্ত্রলুট এর সাথে জড়িত ছিল।
এ বাহিনী তুরাগ ও বুড়িগঙ্গা নদীর বালুভর্তি ট্রলার, ইটের কার্গোতে ডাকাতি ও আমিন বাজার এলাকার শতাধিক ইটভাটা থেকে নিয়মিত চাঁদা সংগ্রহ করতো। এছাড়াও এলাকার প্রভাবশালীদের টার্গেট করে গাংচিল বাহিনীর সদস্যরা মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদা না দিলে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। চাঁদাবাজি, খুন, ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই সহ তুরাগ আর বুড়িগঙ্গা নদীর দুই ধারে একক ছত্র আধিপত্য বিস্তার ছিল এই বাহিনীর প্রধান কাজ।
২০০০ সাল থেকে সাভার আমিন বাজার ও তার আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনার মধ্য দিয়ে উত্থান হয় গাংচিল বাহিনীর; যার প্রধান ছিল আনোয়ার হোসেন ওরফে আনার। বেশিরভাগ সময় পানিবেষ্টিত এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করায় এর নাম দেওয়া হয় গাংচিল বাহিনী। ২০১৭ সালের পর সালাউদ্দিন এমপি সালাউদ্দিন নেতৃত্বে এসে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড শুরু করে। এ বাহিনী মূলত আমিন বাজার, গাবতলী, ভাকুর্তা, কাউন্দিয়া, বেড়িবাধ, কেরানীগঞ্জ ও মোহাম্মদপুর এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ডাকাতি, খুন ইত্যাদি কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিল।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা জানায়, তারা সবসময় নদীতে ও নদীর তীরবর্তী এলাকায় তাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করে এবং বেশিরভাগ সময় নদীপথে যাতায়াত করে। তাদের যাতায়াতের বাহন ছিল ডাবল ইঞ্জিন চালিত ট্রলার। তারা সাভার-আমিনবাজার এলাকার বিভিন্ন ইটভাটার মালিক ও তুরাগ-বুড়িগঙ্গা নদীতে চলাচলকারী বালু ভর্তি ট্রলার মালিকের কাছ থেকে মাসিক ভিত্তিতে চাঁদা আদায় করতো। চাঁদা না দিলে নেমে আসতো ভয়াবহ বিপদ।
উল্লেখ্য, এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্যের বিরুদ্ধে পূর্বে সাভার মডেল থানায় খুন, অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ও মারামারির একাধিক মামলা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। র্যাব আরও জানায়, আটক গাংচিল বাহিনীর প্রধানসহ তিনজনের নামে সন্ধ্যায় সাভার মডেল থানায় মামলা দায়ের করে তাদেরকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।