প্রধান মেনু

সাদা সোনা খ্যাত বাগদা চিংড়ির দাম মারাত্মক কমায় চিংড়ি চাষ হুমকির মুখে

এস,এম, আলাউদ্দিন সোহাগ, পাইকগাছা, (খুলনা) ॥ সাদা সোনা খ্যাত বাগদা চিংড়ির দাম মারাত্মক কম হওয়ায় খুলনার পাইকগাছায় চিংড়ি চাষ হুমকির মুখে পড়েছে। গত ২/৩ বছরে খরচ বাদে উৎপাদন খরচ না উঠায় অধিকাংশ চিংড়ি চাষীরা হতাশায় ভুগছে। এভাবে চলতে থাকলে এ রপ্তানী খাতটি বন্ধের উপক্রম হবে বলে চিংড়ি চাষীরা জানিয়েছেন। এ খাত থেকে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাবে। বেকার হয়ে পড়বে শ’ শ’ পরিবার। অবনতি ঘটবে আইন শৃংখলার। জানা গেছে, খুলনার পাইকগাছা লবণ পানির সাদা সোনা চিংড়ি চাষ অধ্যুষিত এলাকা। ৮০’র দশক থেকে ধান চাষের পাশাপাশি চিংড়ি চাষ শুরু হয়। যার থেকে সরকার প্রতি বছর আয় করছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব।

কিন্তু কয়েক বছর ধরে বাগদা চিংড়ীর দাম মারাত্মকভাবে দরপতন হওয়ায় খাতটি হুমকির মুখে পড়েছে। কয়েক বছর পূর্বে চিংড়ির গ্রেড হিসেবে বাজার দাম ছিল কেজিপ্রতি ২০ গ্রেড ১২-১৪’শ টাকা, ৩০ গ্রেড হাজার থেকে ১২’শ টাকা, ৪০ গ্রেড ৬-৮শ টাকা, ৫০ গ্রেড ৫-৭শ টাকা,সর্বনিম্ন ছিল সাড়ে ৪ থেকে ৫শ টাকা। গত তিন বছর ধরে পুশ করার অজুহাতে চিংড়ির দাম একেবারে কমিয়ে আনা হয়েছে। সর্বোচ্চ বাজার মূল্য কেজিপ্রতি ৫-৭শ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৩-৪শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ এক বিঘা জমির হারি সর্বনিম্ন ১২ হাজার টাকা। একজন শ্রমিক মাসিক বেতন ৭-১০ হাজার টাকা। তাছাড়া দৈনিক মাথাপিচু দিনমজুর ৪শ টাকা। বাগদার পোনা প্রতি হাজার (নদী) ১৫শ, হ্যাচারী ৪শ টাকা। সার কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি যা খরচান্তে উৎপাদন যা হচ্ছে বাজার দর নেই।

এছাড়া ভাইরাসে কয়েক মাস জুড়ে মাছ মরা এবং সার্বিক খরচ মিটিয়ে উৎপাদন খরচ ওঠানো একজন চাষীর পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মৎস্য অফিস সুত্রে জানা যায়, পাইকগাছা মোট মৎস্য চাষীর সংখ্যা ৪৮১৭ জন। ২০১৭-২০১৮ প্রতি বছর চিংড়ি উৎপাদান হয়েছে ৫৭২০,৫০ মেট্রিক টন মাছ, ৩৭২০,৮০ মেট্রিক টন, কাঁকড়া ৪১১০,৮০ মেট্রিক টন। যা মোট উৎপাদন ১৩৫৫১,৩০ মেট্রিক টন। প্রতিবছর লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও চিংড়ির দাম না থাকলে চাষটি বন্ধের উপক্রম হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাস বলেন, কিছু কিছু অসৎ ব্যবসায়ীদের কারণে চিংড়ি খাতে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।

অপরদিক, ২২ মে থেকে জুলাই ২২ পর্যন্ত চিংড়ি প্রজননকাল ধরায় এ সময় বাজারে কোন পোনা না থাকায় ভরা চিংড়ি চাষ মৌসুমে চিংড়ি চাষীরা চরম বিপাকে থাকে। এ ব্যাপারে খুলনা জেলা চিংড়ি পোনা হ্যাচারী মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া রিপন বলেন, প্রজন্ম কাল বাংলা কার্তিক থেকে পৌষ মাস পর্যন্ত সময় নির্দিষ্ট করা হলে চিংড়ি চাষীদের দুশ্চিন্তায় ভুগতে হতো না।