সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে একযোগে কাজ করবে বাংলাদেশ-জাপান

টোকিও, ১৩ বৈশাখ (২৬ এপ্রিল) : ২০৪১ সাল নাগাদ একটি জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে উদ্ভাবন, গবেষণা, মানব সম্পদ উন্নয়ন, সাইবার সিকিউরিটিসহ তথ্যপ্রযুক্তির নানা ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে একযোগে কাজ করবে বাংলাদেশ ও জাপান।
আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী কিশিদা ফুমিও (KISHIDA Fumio) এর উপস্থিতিতে জাপানি প্রধানমন্ত্রীর অফিসের লার্জ মিটিং রুমে বাংলাদেশ ও জাপান সরকারের মধ্যে এ বিষয়ে এক সহযোগিতা স্মারক (এমওসি) স্বাক্ষরিত হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি (IWAMA Kiminori) নিজ নিজ দেশের পক্ষে সহযোগিতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
সহযোগিতা স্মারক চুক্তির আওতায় দীর্ঘমেয়াদি বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে উদ্ভাবন, গবেষণা, মানব সম্পদ উন্নয়ন, ডিজিটাল অর্থনীতি, ডিজিটাল লিটারেসি, সাইবার সিকিউরিটি, তথ্য আদান-প্রদান, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রযুক্তি ইত্যাদি ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব ও পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশের সঙ্গে এক সাথে কাজ করবে জাপান। এতে আরো বলা হয়, ক্রমবর্ধমান সাইবার অপরাধের ঘটনা প্রতিরোধ এবং প্রচলিত সাইবার নিরাপত্তা নীতিমালা ও এ ব্যাপারে সর্বোত্তম অনুশীলনের মডেলগুলোর আদান-প্রদান এবং সাইবার নিরাপত্তার চলতি বিষয়ে সংলাপ আয়োজনের পাশাপাশি মানবসম্পদের সক্ষমতা উন্নয়ন ও বিশেষজ্ঞ বিনিময়ে সহযোগিতা করবে দুই দেশ।
টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তথ্যপ্রযুক্তিতে অগ্রগামী দেশ জাপানের সাথে সহযোগিতা স্মারককে যুগান্তকারী অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, এই চুক্তি তথ্যপ্রযুক্তিতে জাপানের সহযোগিতাকে আরো সম্প্রসারিত করবে এবং ২০৪১ সাল নাগাদ একটি সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিদীপ্ত ও জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের অভিযাত্রাকে বেগবান করবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ইতোমধ্যে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকার) মাধ্যমে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: আইসিটি ২০৪১ মাস্টার প্ল্যান’ প্রণয়ন করেছি। সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে এ মাস্টার প্ল্যান অনুসারে প্রকল্প গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে জাপানের সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। পলক বলেন, আগামীতে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার হবে। এসব প্রযুক্তি ব্যবহারে জাপানের পরামর্শ ও সহযোগিতা একদিকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং অন্যদিকে সম্ভাবনা কাজে লাগানোর পথ সুগম করবে।
সহযোগিতা স্মারক অনুসারে আরো যেসব ক্ষেত্রে উভয় দেশ সহযোগিতা করবে তা হলো বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী এবং আইটি খাতের কর্মীদের আপস্কিলিং প্রোগ্রাম প্রদানের জন্য জাপানি টেক ইউনিভার্সিটি এবং ইনস্টিটিউটের সাথে সহযোগিতা। এছাড়া, সাইবার স্পেসে আন্তর্জাতিক আইনের প্রযোজ্যতা পুনঃনিশ্চিত করে, রাষ্ট্রীয় আচরণের ক্ষেত্রে ২০১৩, ২০১৫ এবং ২০২১ সালের UNGGE রিপোর্টের বাস্তবায়নে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সহযোগিতায় একসঙ্গে কাজ করবে। সাইবারস্পেস এবং সাইবারস্পেসে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর দায়িত্বশীল আচরণ ও অ-বাধ্যতামূলক নিয়ম মেনে চলা এবং সেইসাথে যথাযথভাবে কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজারস (CBMs) পরিচালনা করে এবং ক্ষমতা বৃদ্ধি প্রসারিত করতে স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রচেষ্টা চালাবে।
প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।