সরকার মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে কাজ করে যাচ্ছে —কৃষিমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুদূরপ্রসারী চিন্তার ফলশ্রুতিতে জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি উন্নয়নকে রাষ্ট্রের অন্যতম প্রাধিকার হিসেবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কৃষি গবেষণার প্রায় সকল বড় বড় প্রতিষ্ঠান তাঁর সৃষ্টি। তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যেই খাদ্য উৎপাদনে বিশেষত দানাদার জাতীয় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে দেশ। আজ কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে খাদ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত Nutrition Olympiad-২০১৯ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
খাদ্য সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ডেলিগেশনের প্রধান ও অ্যাম্বাসেডর রেন্সজে টেরিংক ((Rensje Teerink), জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন। কৃষিমন্ত্রী বলেন, আত্মনির্ভরশীল ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্য অর্জনে খাদ্য ব্যবস্থাপনাকে বাস্তবমুখী ও শক্তিশালী করা হয়েছে।
খাদ্যসহ প্রতিটি খাতে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছি। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানাই। তিনি আরো বলেন, কৃষিকে আধুনিকায়ন এবং লাভজনক করার লক্ষ্যে সার, বীজ, সেচসহ কৃষি উপকরণ আরো সহজলভ্য করা হয়েছে। আবহাওয়া ও জলবায়ুসহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। জনগণের জীবনযাত্রার ক্রমাগত মানোন্নয়ন, আয় বৃদ্ধি ও খাদ্যসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।
কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান অপরিসীম। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন ও পুষ্টিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। প্রাণিজ আমিষের প্রায় ৯০ শতাংশ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত থেকে আসে। আমাদের দেশে অনেক প্রজাতির সুস্বাদু মাছ আছে। সেগুলো রক্ষার উদ্যোগ নিতে হবে। ড. রাজ্জাক বলেন, পরিবেশ উন্নয়ন, জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং বনভূমি সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমের ব্যাপক প্রসার ঘটাতে আমরা নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছি।
গত সাড়ে ১০ বছরে আমাদের বনভূমির পরিমাণ ৯ থেকে বেড়ে ১৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০২০ সালে দেশের বৃক্ষাচ্ছাদিত ভূমি শতকরা ২০ ভাগে উন্নীত করার লক্ষ্যে কার্যক্রম অব্যাহত আছে। “Bangladesh Delta Plan-2100” শীর্ষক একটি শতবর্ষী ও সামগ্রিক কৌশলগত পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, পারিবারিক সম্পদ- ভিত্তির উন্নয়ন, মাতাপিতার শিক্ষা, প্রসব পূর্ব ও পরবর্তীকালে উন্নত স্বাস্থ্যও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদ- অনুযায়ী অনেকক্ষেত্রে তুলনামূলক অবদান রাখছে। বাংলাদেশে পুষ্টি উন্নয়নে সাম্প্রতিককালে তরুণ ও কিশোরদের সম্পৃক্ততা একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
এইউদ্যোগের অংশ হিসেবে দেশব্যাপী উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নিউট্রিশন ক্লাবের প্রতিষ্ঠা তাদেরকে যথেষ্ট উৎসাহ যোগাচ্ছে। এসডিজি এর খাদ্য ও পুষ্টি সংশ্লিষ্ট লক্ষ্যসমূহ অর্জনে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার কারিগরি সহায়তায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে একটি ‘জাতীয় খাদ্য ও পুষ্টি নীতি’ প্রণয়নের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নে বর্তমানে তরুণ ও কৃষকদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পুষ্টি উন্নয়নে সকলের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।