সরকারি ব্যয়ে দক্ষতা, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা থাকতে হবে — পরিকল্পনামন্ত্রী

ঢাকা, ১৭ মাঘ (৩০ জানুয়ারি) : ‘বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট সিস্টেম পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্যে সফররত পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গতকাল (সোমবার) যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিপরিষদ কার্যালয়ের ক্রাউন কমার্শিয়াল সার্ভিসের বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। সাক্ষাৎকালে তাদের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় এবং বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট সিস্টেম নিয়ে আলোচনা হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাংলাদেশের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট সিস্টেমের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি অবস্থানে এসেছে, বাংলাদেশ স্বপ্ন দেখতে এবং স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে শিখেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের কথা সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ দ্রুত এগিয়ে চলেছে।
যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের বন্ধুপ্রতিম দেশ এবং সবসময় বন্ধুর মত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে এসেছে এবং সামনেও যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে পরিকল্পনামন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পরিকল্পনামন্ত্রী আরো বলেন, সরকারের বাজেটের একটি বিরাট অংশ ব্যয় হয় ক্রয়কার্যক্রমে। জনগণের করের টাকা ব্যয় করেই সরকারের ক্রয়কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়।
জনগণের উন্নয়নের লক্ষ্যে সঠিকভাবে এ অর্থ ব্যবহার করতে হবে। সরকারি ব্যয়ে সর্বোচ্চ দক্ষতা, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা থাকতে হবে। সঠিকভাবে সরকারের অর্থ ব্যয় করতে পারলে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বাড়বে। আর সরকারি ব্যয়ে সর্বোচ্চ দক্ষতা, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা আনতেই আমরা সরকারি ক্রয়প্রক্রিয়াকে ডিজিটালাইজ করেছি যা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নির্মাণের অন্যতম একটি শর্ত।
দক্ষিণ এশিয়ায় অবকাঠামো ও জ্বালানিখাতে মোট দেড় লাখ কোটি ডলার বিনিয়োগ লাগবে, যার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এত বেশি বিনিয়োগে ইলেক্ট্রনিক প্রকিউরমেন্টের কোনো বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে প্রকিউরমেন্ট কার্যক্রমে বেসরকারি খাতকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ই-জিপি’র ফলে ঘরে বসেই টেন্ডারে অংশগ্রহণকারীরা সরকারি ক্রয়প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারছেন। দেশবিদেশে যা ব্যাপকভাবে প্রশংসা অর্জন করেছে। ই-জিপি সার্কভুক্ত দেশে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
বর্তমানে ই-জিপিতে ৫৬টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রায় ৮০ শতাংশ ক্রয়কার্যক্রম সম্পন্ন হচ্ছে। মুস্তফা কামাল বলেন, ‘অভিজ্ঞতা অর্জনে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট সিস্টেম পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী থেকে অর্জিত জ্ঞান এবং আজকের এ আলোচনা আমাদেরকে ই-জিপি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আরো বেশি অগ্রসর ও বাস্তবভিত্তিক হতে সহায়তা করবে। যুক্তরাজ্য ক্রয়কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, যা আমাদের অনুপ্রাণিত করবে।
ক্রাউন কমার্শিয়াল সার্ভিসের বৈঠকে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মোঃ তাজুল ইসলাম ও মোঃ আব্দুল হাই, সিপিটিইউয়ের মহাপরিচালক মোঃ ফারুক হোসেনসহ ছয় সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল।