সবার আগে সংবাদ দিতে গিয়ে যেন তথ্যবিভ্রাট না ঘটে — তথ্যমন্ত্রী

ঢাকা, ২০ ফাল্গুন (৪ মার্চ) : সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ দিতে গিয়ে যাতে ভুল তথ্য পরিবেশিত না হয়, সেদিকে সর্তক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ। আজ রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে প্রয়াত বরেণ্য সাংবাদিক শাহ আলমগীরের স্মরণে ‘স্বপ্নের সারথি শাহ আলমগীর’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গণমাধ্যম প্রসঙ্গে মন্ত্রী একথা বলেন। অনলাইন গণমাধ্যম সংবাদ পরিবেশনে প্রতিযোগিতার বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে এখন সবার আগে সর্বশেষ সংবাদ পরিবেশনের প্রতিযোগিতা চলে। সেটি করতে গিয়ে দেখা যায়, অনেক সময় সংবাদের গুণগতমান নষ্ট হয়। বিশেষ করে অনলাইনগুলোর ক্ষেত্রে সেটি হয়। অনলাইনগুলোকে সবার আগেই সংবাদটা পরিবেশন করতে হয়। কার আগে কে দিল সেটি নিয়ে একটি প্রতিযোগিতা আছে। এটি করতে গিয়ে দেখা যায়, বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ অনেক সময় হয় না। অনেক সময় ভুল সংবাদ হয়, অসত্য সংবাদ হয়।’
এ বিষয়ে সতর্কতা নিশ্চিত করতে পিআইবি (বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট), প্রেস কাউন্সিল, জাতীয় প্রেসক্লাব, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ঢাকা, চট্টগ্রাম-সহ শহর এবং মফস্বলে কর্মশালা করার পরামর্শ দেন মন্ত্রী। শীঘ্রই অনলাইন গণমাধ্যমের রেজিস্ট্রেশনের উদ্যোগ প্রসঙ্গে ড. হাছান বলেন, ‘অনলাইনগুলোকে আমরা রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনার জন্য দরখাস্ত আহ্বান করেছিলাম এবং সাড়ে তিন হাজারের বেশি দরখাস্ত পড়েছে। আইটিটিভি, অনলাইন টিভিগুলোকেও আমরা রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছি সেখানেও পাঁচশ’র মতো আবেদন এসেছে। আমরা অনেক আগে থেকেই রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার চেষ্টা করছি।’ তথ্যমন্ত্রী আরো জানান, ‘অনলাইনগুলোর বিষয়ে কিছু সংখ্যকের তদন্ত রিপোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমরা পেয়েছি।
একটি সংস্থা থেকে এক হাজারের বেশি পেয়েছি আরেকটি সংস্থা থেকে একশ’র কম পেয়েছি। শুধুমাত্র একটি সংস্থার রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে দেয়া যায় না, আরেকটু অপেক্ষা করছি। প্রতিষ্ঠিত অনলাইনগুলোকে প্রথম ধাপেই দিতে চাই। সেজন্য তাদের রিপোর্টটাও যাতে আসে সেজন্য অপেক্ষা করছি।’ গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী রিপোর্টের প্রশংসা করে ড. হাছান বলেন, ‘দেশের একজন নাগরিক হিসেবে, মন্ত্রী হিসেবে নয়, কিছু গণমাধ্যমের অনুসন্ধানী রিপোর্টের জন্য আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। তাদের অনেক অনুসন্ধানী রিপোর্ট সমাজকে উপকৃত করে, সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়।’
রিপোর্টিংয়ের গুণগত মানের উৎকর্ষ সাধনের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক ভালো রিপোর্ট হয়, আমি অনেক রিপোর্টারকে না পেলেও সেই পত্রিকায় ফোন করে অনেক সময় বলি যে ভালো রিপোর্ট হয়েছে, ধন্যবাদ জানাই রিপোর্টারকে। একটি বির্তকভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থার মধ্য দিয়েই রাষ্ট্র, সমাজ ও জাতির বিকাশ ঘটে। সেটি করার ক্ষেত্রে গুণগত রিপোর্টিংসম্পন্ন গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ প্রয়াত সাংবাদিক শাহ আলমগীরের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তার আত্মা শান্তিতে থাকুক সেই প্রত্যাশা ও প্রার্থনা করে তার জন্য তার পরিবার ও সহকর্মীরা যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে, সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।
আজ প্রকাশিত স্মারকগ্রন্থের মাধ্যমে তিনি যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকবেন, এ কামনা করি।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রয়াতের সহধর্মিণী বেগম মায়া আলমগীর, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক সাইফুল আলম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, বিশিষ্ট সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা ও রহমান মুস্তাফিজ প্রমুখ বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।