প্রধান মেনু

প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্পের আওতায় ঘর বরাদ্দে দুর্নীতির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

শামীমুল ইসলাম শামীম, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি, ০৯জুলাই ২০২০ঃ ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার আদিবাসী সম্প্রদায় আর্থ সামাজিক অবস্থার জীবনমানের উন্নয়ন সাধনে “যার জমি আছে ঘর নেই” প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে দশটি ঘরনির্মাণ কাজে ও ঘর বরাদ্দে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম, অফিস স্টাফ ইসমাইল ও মিন্টু এবং সততা আদিবাসী সমাজ কল্যাণ সংস্থার সভাপতি রাম সরকার এর বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শৈলকুপা উপজেলার আদিবাসী সম্প্রদায়।বুধবার (৯জুলাই) দুপুর সাড়ে বারটায় ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আদিবাসী সম্প্রদায়দের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কুমিড়াদহ আদিবাসি শ্রমজীবি সমবায় সমিতির সদস্য দিলীপ কুমার বিশ্বাস। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগ আদিবাসিদের ঘর নির্মাণে দুইলাখ বিশ হাজার টাকা ঘর প্রতি বরাদ্দের পরও প্রত্যেকের নিকট থেকে চল্লিশ, পঞ্চাশ ও ষাট হাজার টাকা ঘর বরাদ্দ বাবদ ঘুষ গ্রহণ করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিস স্টাফ ইসমাইল ও মিন্টু’র দাবিকৃত টাকা যারা দিতে ব্যর্থ হয়েছে তাদের ভাগ্যে ঘর জোটেনি। উপজেলাতে সাতটি আদিবাসী সমিতি সংগঠন থাকলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসের পছন্দের দুই-তিনটি সমিতির লোকদের টাকার বিনিময়ে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ছয়টি সমিতিকে ব্যতিরেখে দু’টি পছন্দের সমিতিকে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক বরাবর ২০১৯-২০২০অর্থ বছরের আদিবাসিদের বসতঘর নির্মাণে অর্থ বরাদ্দে দুর্নীতি প্রসঙ্গে ছয়টি সমিতির যৌথ স্বাক্ষরে একটি লিখিত দরখাস্ত জমা দেওয়া হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম গোপনীয়ভাবে সততা আদিবাসি সভাপতি রাম সরকার এবং উপজেলা নির্বাহী অফিস স্টাফ ইসমাইল ও মিন্টুর মাধ্যমে প্রত্যেক ঘরনির্মানে ঘরপ্রতি পঞ্চাশ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহনে দশটি ঘর দশজন আদিবাসীকে পাঁচলাখ টাকার বিনিময়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে এবং রাম সরকার এর মাধ্যমে বেনীপুর সরদার পাড়ার কল্পনা-১ ও
কল্পনা-২ এর নিকট থেকে আদিবাসিদের প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্পের আওতায় ঘর বরাদ্দ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে দুই জনের নিকট থেকে পঁচিশ হাজার এবং আঠার হাজার টাকা অগ্রিম নেওয়া হয় ও শৈলকুপায় এ যাবদ আদিবাসিদের নামে যত টাকা বরাদ্দ এসেছে তা ছাড়পেতে উপজেলা নির্বাহী অফিসকে মোটা অংকের ঘুষ দেওয়া লেগেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে কয়েকজন বক্তা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম, অফিস স্টাফ ইসমাইল ও মিন্ট’র অপসারণও দাবি করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, অগ্রগতি আদিবাসি বহুমূখি সমবায় সমিতি, কচুয়া মধুদাহ আদিবাসি কল্যান বহুমূখি সমবায় সমিতি, কুমিড়াদহ আদিবাসি শ্রমজীবি সমবায় সমিতি, হাটফাজিলপুর আদিবাসি মৎসজীবি সমবায় সমিতি ও শৈলকুপা আদিবাসি দারিদ্র বিমোচন সংস্থার সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকদ্বয় যথাক্রমে- কমল চন্দ্র দাস, কুমার সরকার, শম্ভু সরদার, গোপাল বিশ্বাস ও দিলীপ বিশ্বাস।

উল্লেখ্যঃ ছয়টি আদিবাসী সমিতি ঘর বরাদ্দ না পাওয়ায় এবং তাদের সমিতি বাদ রেখে দুটি সমিতিকে প্রাধান্য দেওয়ার কারণে অনেক ক্ষতিগ্রস্থসহ হয়রানীর শিকার হচ্ছেন তারা। তাছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব সাইফুল ইসলাম এর নির্দেশে ঘরবরাদ্দ না পাওয়া ছয়টি সমিতির সভাপতি/সাধারন সম্পাদকদের অপরিচিত লোকজন দ্বারা তাদেরকে ভয়-ভীতিসহ প্রাণ নাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে এবং তারা উপজেলায় যেতে পারছে না বলে অভিযোগ করেন।

তাছাড়া ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে যে প্রকল্পপ্রস্তাব আসে সেই প্রকল্প প্রস্তাব উপজেলা নির্বাহী অফিসের কর্মচারী কম্পিউটার অপারেটর মিন্টু এবং ইসমাইল অফিস সহকারী ভুয়া কাগজ তৈরী করে। রাম সরকার পিতাঃ সনতোষ সরকার, গ্রামঃ বেনীপুর/অশিৎ বিশ্বাস, পিতাঃ মৃত চৈতন্য বিশ্বাস, গ্রামঃ কুমিড়াদহ এর মাধ্যমে প্রকল্পের টাকা আত্মসাত করে।রাম সরকার তার বাবার ক্যান্সার এর কথা বলে ভুয়া কাগজ দিয়ে দুই লক্ষ টাকা উপজেলা নির্বাহী অফিস থেকে তুলে নিজেরা ভাগ করে নেয় মিন্টু, অশিৎ, রাম ইসমাইল।

আদিবাসীদের উক্ত টাকা আত্মসাৎ করে তারা নিজেরা লাভবান হয় এবং তার প্রতিবাদ করায় আমাদের এহেন হুমকি-ধামকি এবং প্রাণ নাশ করিবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। ছয়টি সমিতির এহেন আর কোন উপায় বা মাধ্যম নেই যে যার কাছে গেলে উক্ত বিষয়টি সমাধান হবে এবং আদিবাসীদের উক্ত আত্মসাতের টাকা ফেরৎ পাবে। উক্ত বিষয়টি সাংবাদিক ভাইয়েদের মাধ্যমে উপস্থাপন করিয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি এবং আমাদের জীবনের ভবিষ্যৎ ও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করিয়া আপনাদের কাছে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।