শেখ হাসিনার কথা বলে কাদঁলেন শামীম ওসমান

কাশীপুর হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত কর্মী সভায় সভাপতিত্ব করেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফ উল্লাহ বাদল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী।শামীম ওসমান তার বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে দীর্ঘদিন। তার মত খোদাভীরু ও দেশপ্রেমিক মানুষ আমি খুব কম দেখেছি। পরিবারের সবাইকে হারিয়ে তিনি এদেশের সাধারণ মানুষের মাঝেই তার পরিবারকে খুঁজে বেড়ান।
শামীম ওসমান বলেন, অনেক সময় দেখেছি তিনি কিভাবে এদেশে একেবারে সাধারণ মানুষদের বুকে জড়িয়ে ধরেন। একদিন তিনি কয়েকজন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাকে আসতে দেখে তাদের কাছে ডেকে জড়িয়ে ধরেছিলেন। এরপর হঠাৎই তার চোখে পানি দেখে আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম আপা কেন কাদঁছেন। প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছিলেন, শামীম আমার বাবা, মা, ভাই, বোন কেউ নেই। এদেশের জন্য তারা জীবন দিয়েছেন। কোন বৃদ্ধ লোক যখন আমার মাথায় হাত বুলায় মনে হয় যেন আমার বাবা আমাকে দোয়া করছেন!
কোন বৃদ্ধাকে যখন বুকে জড়িয়ে ধরি মনে হয় আমার মা আমাকে পরম স্নেহে জড়িয়ে ধরেছেন। ছোট ছোট শিশুগুলো যখন আমাকে দেখে ‘হাসিনা’, ‘হাসিনা’ বলে চিৎকার করে তখন মনে হয় আমার রাসেল আমাকে ডাকছে। তাই জীবনের শেষ দিনটিও আমি এদেশের মানুষের জন্য বিলিয়ে দিতে চাই। এসব বলার সময় শামীম ওসমানের চোখ বেয়ে পানি পড়ছিলো আর আবেগঘন বক্তব্যে উপস্থিত অনেকেই তখন চোখ মুছছিলেন।
শামীম ওসমান নেতাকর্মী ও আগত সাধারন মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন, আমার বাবা, মা কেউ নেই। মা বেঁচে থাকতে তার কাছে জিজ্ঞাসা করেই রাজনীতি করেছি, সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন আপনারাই আমার অভিভাবক, আপনারা তৃনমূলের কর্মীরাই আমার সিদ্ধান্তের অধিকার রাখেন। কারণ, জননেত্রী শেখ হাসিনাও তৃণমূলকে ভালোবাসেন।
তিনি বলেন, নেতারা বেঈমানী করতে পারে কিন্তু কর্মীরা কখনওই বেঈমানী করেনি, করবে না। আমিও শেখ হাসিনার একজন কর্মী হয়েই থাকতে চাই। এই দেশকে রক্ষার জন্য শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় আনতে হবে।
শামীম ওসমান আরো বলেন, বড় বড় ডক্টর সাহেবরা আঁতাত করে দেশের সম্পদ অন্যের কাছে বিক্রি করতে চাইছে, তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে চাইছে। যার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার যোগ্যতা নাই তারা এখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখছে। হাজার কোটি টাকা বাজেট করে শেখ হাসিনাকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসতে চাইছে। তারা চায় না খালেদা জিয়া জেল থেকে বের হউক। তারা খালেদা জিয়ার কাঁধে বন্ধুক রেখে বিদেশীর কাছে মুরিদ হয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়।
কিন্তু সেই ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে তৃনমূলের কর্মীরাই যথেষ্ঠ। আসন্ন নির্বাচনের আগে যেদিন ক্ষমতা ছাড়বো ইনশাল্লাহ সেদিন লাখ লাখ লোক নিয়ে মাঠে নামবো। সেই দিন আবারো প্রমান হবে নারায়ণগঞ্জের মাটি শেখ হাসিনার ছিল, আছে এবং থাকবে। সেই দিন নারায়ণগঞ্জ থেকে পুরো দেশ হবে উজ্জীবিত আর যারা খেলার চেষ্টা করছে তাদের আত্মা কাঁপিয়ে দেওয়া হবে।
কর্মীসভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি চন্দন শীল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম প্রমূখ।