শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে চামড়া শিল্প কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব

ঢাকা, ৮ আশ্বিন (২৩ সেপ্টেম্বর) : চামড়া শিল্পের উন্নয়ন ও এখাতের বিদ্যমান সমস্যাসমূহ সমাধানের লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে চামড়া শিল্প কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
চামড়া শিল্পখাতের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্স – এর ৪র্থ সভায় এ প্রস্তাব করা হয়। আজ উক্ত টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক ও শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সভাপতিত্বে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন; শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার; শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা; বিসিক চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান; রাজউক চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী; পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ আশরাফ উদ্দিন; ট্যানারি শিল্পের সাথে জড়িত ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী বলেন, চামড়া শিল্পখাত একটি বৃহৎ শিল্প। চামড়া রপ্তানির জন্য বিদেশে নতুন বাজার খুঁজতে হবে। চামড়া ব্যবসায়ীদের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এজন্য সরকার সবরকম সহযোগিতা করবে।
আজকের সভায় ২৮ আগস্ট ২০২১ অনুষ্ঠিত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় সাভারের চামড়া শিল্পনগরী বন্ধের সুপারিশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
ট্যানারি কারখানাসমূহ হাজারীবাগ থেকে নির্মাণাধীন অসম্পন্ন চামড়া শিল্পনগরীতে স্থানান্তর করা হলেও কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার বা সেন্ট্রাল ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (সিইটিপি) এবং অন্যান্য উপাদানের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এ অবস্থায় কয়েকটি ট্যানারির অনুকূলে পরিবেশ ছাড়পত্র প্রদান করা হলেও এখন পরিবেশ ছাড়পত্র নবায়নে সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। আর পরিবেশগত ছাড়পত্র নবায়ন প্রাপ্তি বিলম্বিত হওয়ায় রপ্তানিকারক হিসেবে এক্সপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা ইআরসি, আমদানিকারক হিসেবে ইমপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা আইআরসি ও শুল্কমুক্তভাবে পণ্য আমদানির বন্ড সুবিধার ছাড়পত্র পেতে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে শিল্পমন্ত্রী বলেন, সরকার ট্যানারি শিল্পনগরী বন্ধ করার পক্ষে নয়। দেশে কাঁচামাল আছে, জনশক্তি আছে, অভিজ্ঞতা আছে। কাজেই শিল্পনগরীর চামড়া কারখানাসমূহের সুষ্ঠু উৎপাদন কার্যক্রমের স্বার্থে পরিবেশগত ছাড়পত্রের নবায়ন ত্বরান্বিতকরণ, সিইটিপি, কার্যকর করা, আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ করার পাশাপাশি কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে করতে হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী সভায় ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বলেন, চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে বিলিয়ন ডলার আয় করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।
পরিবেশমন্ত্রী সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বলেন, সাভারে ২৫ হাজার ঘনমিটার তরল বর্জ্য শোধনের ক্ষমতা থাকলেও উৎপাদন হচ্ছে ৩৫-৪০ হাজার ঘনমিটার তরল বর্জ্য। এতে নদীর পানি দূষণ হচ্ছে। যৌথভাবে সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করতে হবে।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার সভায় কোরবানির ঈদে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক চামড়ার যে মূল্য নির্ধারণ করেছে, প্রান্তিক পর্যায়ে ব্যবসায়ীরা যথাযথ মূল্য কেন পাননি, এজন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের খোঁজ নেওয়া উচিত ছিল বলে তিনি মন্তব্য করেন।
শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা কেন্দ্রীয়ভাবে চামড়া মজুদ ও সংরক্ষণের জন্য গুরুত্বারোপ করেন।