প্রধান মেনু

শিক্ষা মন্ত্রীর সুদৃষ্টি প্রয়োজন সদরপুরে পাঁচ হাজার শিশু প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত

অবজ্ঞা, অবহেলা আর উদাসিনতার কারনে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চরাঞ্চলে প্রায় পাঁচ হাজার কোমলমতি শিশু প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বর্তমান সরকার প্রতি ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো পৌছে দেওয়ার লক্ষে প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক হিসেবে ঘোষনা করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবজ্ঞ, অবহেলা আর চরম উদাসিনতার কারনে সদরপুরের চরাঞ্চলে এ আইন অকার্যকর হয়ে পড়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সদরপুর উপজেলার চরাঞ্চল বলে ক্ষ্যাত চর মানাইর, চর নাছিরপুর ও দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলে সরকারী, বে-সরকারী ও বিভিন্ন এনজিওর প্রাথমিক পর্যায়ের প্রায় ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ঐ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১৫ হাজার ছাত্র/ছাত্রী রয়েছে।

কিন্তু ঐসকল বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের অবজ্ঞা দায়ীত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদের শিক্ষাদানে অবহেলা এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অধিদপ্তরের চরম উদাসিনতার কারনে ঐ সকল বিদ্যালয়ের প্রায় ৫ হাজার কোমলমতি শিশু প্রাথমিক শিক্ষা থেকে ঝড়ে পড়ছে। অনেক দরিদ্র পরিবার বাড়তি আয়ের জন্য শিশুদেরকে বিভিন্ন প্রকার ঝঝুকিপূর্ণ কাজে লাগিয়ে দিচ্ছে। ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে শিশু শ্রম। আবার অনেক শিক্ষা বঞ্চিত শিশু অল্প বয়সে চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন প্রকার অসামাজিক কার্যকথলাপে জড়িয়ে পড়ছে। তাছাড়াও প্রতিবছর বন্যার কারনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্থ্য হওয়ায় চরাঞ্চলে শিক্ষা ব্যবস্থা বাধাগ্রস্থ্য হচ্ছে বলে জানান অনেকে।

স্বরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দিয়ারা নারিকেল বাড়িয়া ইউনিয়নের কাড়াল কান্দি, ফজল সর্দারের কান্দি, শয়তান খালি, চর নাছিরপুর ইউনিয়নের চৌধুরির হাট বিশ্বনাথপুর, কাড়াল কান্দি, চরমানাইর ইউনিয়নের কাচিকাটা, চরবন্দরখোলা, হাকিম মাতুব্বরের হাট ও শিমুলতলী বাজার এলাকার বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬-৭ জন করে শিক্ষক নিয়োগ থাকলেও কোন বিদ্যালয়ে ২/৩ জনের বেশি শিক্ষক উপস্থিত পাওয়া যায়নী। খোজ নিয়ে জানা গেছে চরাঞ্চলে অনেক দুর্গম এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত থাকার কারনে শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে যথা সময়ে উপস্থিত হতে বাধাগ্রস্থ্য হচ্ছে। অনেক শিক্ষকরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও পরিচালনা পরিষদকে ম্যানেজ করে স্থানীয় স্বল্প শিক্ষিত বেকার যুবক যুবতীদের দিয়ে বদলী শিক্ষাকতা করিয়ে নিচ্ছেন।

ফলে কোমলমতি শিশুরা সঠিক শিক্ষা পচ্ছেন না। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষা অধিদপ্তরের যথাযথ মনিটরিং না থাকার কারনে নিয়োগকৃত শিক্ষকরা মাসের পর মাস বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকছেন। ফলে শিক্ষার মান দিন শিক্ষার মান ভেঙ্গে পড়ছে। কর্তৃপক্ষ এ ব্যপারে একটু সুদৃষ্টি দিলেই শিক্ষার মান উন্নত করা সম্ভব বলে মনে করেন অভিভাবক মহল। এ ব্যপারে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অধিদপ্তরের সু-দৃষ্টি দেওয়া একান্ত প্রয়োজ-ন বলে মনে করছেন চরাঞ্চলের অনেকে। প্রতি ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো পৌছে দেওয়ার লক্ষে যোগ্য ও শিক্ষিত ব্যক্তিদের দিয়ে পরিচালনা কমিটি গঠন, দায়ীত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকদেরকে নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে শিক্ষাদানে বাধ্য করা এবং শিক্ষা অধিদপ্তরের উল্লেখিত চগরাঞ্চলের প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখাসহ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের মাধ্যমে হয়তবা চরাঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব বলে মনে করেন সচেতন মহল। সেক্ষেত্রে অনতি বিলম্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ব্যপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের কোন বিকল্প নেই।

ফকির আল- মামুন সদরপুর (ফরিদপুর)