প্রধান মেনু

শিক্ষায় পরিবর্তন ও সংস্কার ট্রান্সফরমেশন হচ্ছে–শিক্ষামন্ত্রী

ঢাকা, ৪ শ্রাবণ (১৯ জুলাই) : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, নতুন শিক্ষাক্রমে প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষার খোলনলচে বদলে ফেলছি। এখন শিক্ষায় পরিবর্তন ও সংস্কারের কথা বলছি না, ট্রান্সফরমেশনের কথা বলছি। শিক্ষার্থীদের  হাতেকলমে শিখতে হবে। অথচ ব্যাপক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে— সমস্ত শ্রেণির পাঠ্যসূচি থেকে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত সব কিছু বাদ দেওয়া হচ্ছে।  আপনাদের অনুরোধ করবো গুজবে কান দেবেন না। সত্যতা যাচাই করুন। দায়িত্বশীল মানুষ হিসেবে এটি আমাদের সবারই করণীয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে আমাদের অনেক বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে।

মন্ত্রী আজ  ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অভ্‌ বিজনেস এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি) এর ষষ্ঠ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে  এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত  এ সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি ও আচার্যের প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতির বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী।

সমাবর্তনে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জর্জিয়ার ককেশাস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট এবং ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অভ্‌ ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেন্টস এর বোর্ড চেয়ারম্যান  অধ্যাপক ড.  কখা শেঞ্জেলিয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন  আইএসি যুক্তরাজ্য এর রেসিডেন্ট জাজ ও ফিনল্যান্ডের অনারারি কনসুল জুলিয়ান ফিলিপস। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আইইউবিএটি’র বোর্ড অব ট্রাষ্টিজের চেয়ারম্যান জুবের আলিম।

উচ্চশিক্ষা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, গ্র্যাজুয়েটদের যে প্রত্যাশা আর চাকরি দাতাদের যে প্রত্যাশা এ দু’য়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের সফট স্কিল  দিতে পারছে না এখনও। সে কারণে আমাদের শিক্ষার্থীরা খুব ভালো পড়াশোনা করছে, মেধাবী, ডিগ্রি অর্জন করছে কিন্তু আশপাশের অনেক দেশের শিক্ষার্থীদের তুলনায় আমাদের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ছে। প্রতিবেশি অনেক দেশের শিক্ষার্থীরা হয়ত এত বেশি লেখাপড়া না করেও সফট স্কিল অর্জন করায় তাদের চাকরির ক্ষেত্রে অফার করা হচ্ছে।  কাজেই আমাদের খুব জরুরি কাজ যা করতে হবে ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাকাডেমিয়া লিংকেজ, কোনও কোনও বিশ্ববিদ্যালয় শুরু করেছে, সবাইকেই করতে হবে। কর্মজগতে কী প্রয়োজন সেটি জানতে হবে, আর তাহলে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে তৈরি হবে। আমরা কমিউনিকেশন স্কিলস, কোলাবরেশন স্কিলস, প্রব্লেম সলভিং স্কিলসসহ নানা রকমের স্কিলস জানতে হবে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরোমের গবেষণা বলছে— সেকেন্ডারি স্কুলে যদি কোলাবরেটিং, প্রব্লেম সলভিং স্কিল  শেখানো যায় তাহলে বিশ্ব অর্থনীতিতে ২ দশমিক ৪৫ ট্রিলিয়ন ডলার যুক্ত করবে। আমরা মাধ্যমিক পর্যায় থেকে শুরু করার চেষ্টা করছি। কিন্তু যারা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পার করে এসেছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সেটি শেখাতে হবে।

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা অর্থবহ করতে এবং তার সুফল সকল নাগরিকের কাছে পৌঁছাতে সবাইকে কাজ করতে হবে। শুধু সরকারকে নয় সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।  ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিক যেন তার অধিকার ভোগ করতে পারে তা নিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করতে হবে। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে যেন ধর্মান্ধতায়,  ধর্মের নামে কারো অধিকার ভুলণ্ঠিত না হয়। মন্দকে প্রতিহত করবেন,এটি আপনাদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, মাদক সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নারী নির্যাতন থেকে নিজেদের মুক্ত রাখবেন। সাম্প্রদায়িতকার বিষবাষ্প যেন আপনাদের হৃদয় আচ্ছন্ন করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।