শাল্লার ঘটনায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া যাবে না — মোস্তাফা জব্বার

ঢাকা, ৮ চৈত্র (২২ মার্চ) : ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লার সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক ঘটনা স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরের সবচেয়ে কলঙ্কিত একটি ঘটনা। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের প্রাক্কালে এ ধরনের জঘন্য ঘটনা পরাজিত শক্তির পরিকল্পিত নীলনকশসার অংশ বলে তিনি উল্লেখ করেন। মন্ত্রী এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোরতর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় ওয়েবিনারে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে সংঘটিত সাম্প্রতিক লুটপাটের ঘটনা স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর হীন প্রচেষ্টা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃায় এসব কথা বলেন।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সাবেক মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, সাবেক মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
একাত্তরে হাওর অঞ্চলের মুক্তি যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা জব্বার সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা, দিরাইসহ গোটা হাওর অঞ্চলের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চিত্র তুলে ধরে বলেন, যুগের পর যুগ হাওরের মানুষ সম্প্রীতির অটুট বন্ধনে আবদ্ধ থেকে বসবাস করছে। একাত্তরেও কেবল শাল্লাতেই হামলা-লুটপাট ও অগ্নিসংযোগসহ গণহত্যার ঘটনা ঘটেছিলো।
ওখানকার ১৬১ জন রাজাকারের একটি বাহিনী গ্রামের গ্রাম পুড়িয়েছে, মন্ত্রী নিজে স্বাধীনতার পরে যাদেরকে আত্মসমর্পণ করান ও শাল্লা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে হস্তান্তর করলে তারা ১৬১ জন রাজাকারের ১০৮ জনকেই হত্যা করে। সম্প্রতি নোয়াগাঁওয়ের ঘটনা সেই অবশিষ্ট রাজাকার ও রাজাকারদের উত্তরসূরীরাই ঘটিয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
মোস্তাফা জব্বার আরো বলেন, একাত্তরের হানাদার বাহিনীর এই দেশীয় প্রেতাত্মারা মুক্তিযুদ্ধে পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সাথে হাত মিলিয়ে শাল্লার ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এ ধরনের ঘটনা মেনে নেয়া যায় না। সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি রুখতে হবে। এতে প্রমাণিত হয় একাত্তরের লড়াই এখনও শেষ হয়নি।
বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শের বাংলাদেশে এখনও সেই রাজাকাররা ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তাই আমাদের একাত্তরের লড়াই শেষ হয়নি এবং এজন্য এদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক যুদ্ধ অব্যাহত রাখতে হবে।
হাসানুল হক ইনু বলেন, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে একটি মহল ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক অপকর্ম করে বাংলাদেশ রাষ্ট্র, সংবিধানকে অবজ্ঞা করে দেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বানানোর জন্য লিপ্ত আছে। তিনি ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে উস্কানি দাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
রাশেদ খান মেনন, শাল্লার ঘটনা দেশের সাম্প্রদায়িক অপশক্তির কর্মকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করে বলেন. ইউটিউবের মাধ্যমে সুবর্ণজয়ন্তীর বিরুদ্ধে কথা বলছেন একটি মহল, এ সব উস্কানি দাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, প্রশাসনকে এ ব্যাপারে কঠোর ভূমিকা নিতে হবে। দেশের প্রগতিশীল শক্তিকে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।