প্রধান মেনু

মিয়ানমার ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ঢাকা, ২৯ মাঘ (১২ ফেব্রুয়ারি): মিয়ানমার থেকে তাদের সেনাদের ফিরিয়ে নিতে জাহাজ আসার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্‌মুদ বলেন, জাহাজটি কখন ভিড়বে সেটি টেকনিক্যাল পার্ট। আমরা সম্মত তারা তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন। এটা খুব সহসা হবে।

মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি ও তাদের সাথে কিছু সেনা যারা এসেছে, তারা রোহিঙ্গা গণহত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট কি-না সেটি তদন্ত করার দাবি উঠেছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আপাতত তাদের ফেরত পাঠানো নিয়েই কাজ করছি। কারণ সেটিই আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার এবং মিয়ানমারও তাদের নিয়ে যেতে চায়। আমরা সেটি নিয়েই কাজ করছি।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য আরাকান আর্মি দখল করেছে, বান্দরবানের মিয়ানমার সীমান্তে তারা টহল দিচ্ছে সেটি দেশের নিরাপত্তা নিয়ে সংকট তৈরি করবে কি-না জানতে চাইলে মন্ত্রী হাছান বলেন, মিয়ানমারে যেটি ঘটছে সেটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাদের নিরাপত্তা চৌকি কে পাহারা দিচ্ছে সেটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাদের অভ্যন্তরীণ গন্ডগোলের কারণে এখানে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হোক সেটি আমরা কখনো চাই না। আমাদের এখানে তাদের শেল এসেছে পড়েছে, দুইজন নিহত হয়েছে। সেটি নিয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে আমরা কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছি।

রাখাইনের রাজধানী সিত্তে থেকে বাংলাদেশ কনসুলেটের কূটনীতিকদের সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান তিনি।

বিএনপি বলেছে মিয়ানমার ইস্যুতে সরকার তথ্য গোপন করছে -এ নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপি তো বক্তব্য দিয়ে তাদের দলের অস্তিত্ব জানান দিতে চায়। এখানে মিয়ানমারের যতজন সদস্য আমাদের দেশে প্রবেশ করেছে সে বিষয়ে আমরা সময়ে সময়ে গণমাধ্যমকে অবহিত করেছি। এখানে লুকোচুরি করার প্রশ্নই আসে না। তাদের ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করি খুব সহসা তাদের ফেরত পাঠাতে পারব। তিনি বলেন, বিএনপি এসব বক্তব্য ও নানা কর্মসূচি দিয়ে তাদের হতাশা কাটানোর চেষ্টা করছে। আমরা চাই তারা গণতান্ত্রিক কর্মসূচির মধ্যে থাকবে। সরকারের প্রতিবাদ তারা করতেই পারে। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে তাদের অগ্নিসন্ত্রাস আর করতে দেয়া হবে না।

নাফ নদীর তীরে অনেক রোহিঙ্গা অপেক্ষা করছে, তাদের জন্য বর্ডার খুলে দেওয়া হবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে পাল্টা প্রশ্ন রেখে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহ্‌মুদ বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের দেশে রোহিঙ্গা আছে ১.২ মিলিয়ন। এখন রোহিঙ্গাদের কারণে আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে। যেমন পরিবেশগত সমস্যা, নিরাপত্তাজনিত সমস্যা, মাদকজনিত সমস্যাসহ অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের পক্ষে কি আরো রোহিঙ্গা আশ্রয় দেওয়া সম্ভব? আর মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিয়েই সংঘাত চলছে তা নয়। তাদের মধ্যে নানা জাতিগোষ্ঠী আছে। তাদের মধ্যে নানা সমস্যা চলছে। সেই সংঘাতের উত্তাপের কারণে আমাদের দেশে আমরা নানা ধরনের সমস্যায় পড়ব সেটি কি সঙ্গত?

মিয়ানমার ইস্যুতে ভারত সফরে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে এখন যে সংঘাত চলছে সেই সংঘাতের কারণে আমাদের অঞ্চলে যে সংকট তৈরি হয়েছে, নিরাপত্তা সংকট তৈরি হয়েছে সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেছি। বিশেষ করে মিয়ানমার থেকে যেসব রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করা হয়েছে তাদের নাগরিক অধিকার দিয়ে সেখানে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে ভারতের সহায়তা কামনা করেছি।

মিয়ানমার ইস্যুতে ভারত-বাংলাদেশ কীভাবে একসাথে কাজ করবে-এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী হাছান বলেন, আমরা তাদের সাথে বর্ডার শেয়ার করি। সুতরাং মিয়ানমারে যদি কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটে তাহলে সেটি আমাদের দেশকে যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বা উদ্বিগ্ন করে তাদেরকেও উদ্বিগ্ন করে। সুতরাং দুই দেশেরই যেহেতু উদ্বেগ প্রতিবেশীকে নিয়ে তাই আমাদের একসাথে কাজ করার অনেক বিষয় তো রয়েছে।