মাদারীপুরে কুমার নদের পাড় দখল করে অবৈধ স্থাপনা

কাজী জাফর, মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ মাদারীপুর জেলা শহরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত আড়িয়াল খাঁ’ নদীর শাখা কুমার নদে বালু ফেলে দখল করে অবৈধ বাড়িঘর, দোকানপাট, করাতকল ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বসবাস করছে প্রায় পাঁচ শতাধিক দখলদার। বিষয়টি প্রশাসন দেখে না দেখার ভান করছে। এ বিষয়টি মিডিয়ায় আসার পরও কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছেনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় পর্যায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় কুমার নদের তীরে প্রায় পাঁচ শতাধিক দখলদার কুমার নদের ভরাটকৃত অংশে প্রায় ৫ একর জমি দখল করে বাড়িঘর, দোকানপাট, করাতকল ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বসবাস করছে। ক্রমাগত দখলদারের সংখ্যা বাড়লেও প্রশাসন এ ব্যাপারে নজর দিচ্ছে না। জানা যায়, বিসিকের হুকুম দখলকৃত ১৫ একর জমির মধ্যে অনুমোদিত ৮৪টি শিল্প-কারখানার মধ্যে ৭টি স’মিল যা ফার্নিচারের দোকান হিসেবে বরাদ্দ ও অনুমোদিত এর বাইরে নদের তীরে প্রায় ৫ একর জমিতে অবৈধভাবে ৭/৮টি স’মিল ও ট্রলি বসিয়ে ব্যবসা করে আসছে অবৈধ দখলদাররা।
এছাড়াও বাড়িঘর দোকান-পাট ও আড়তঘর নির্মাণ করা হয়েছে সরকারি জমিতে যার কোনো বৈধতা নেই। মাদারীপুর বিসিক শিল্পনগরীর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, মাদারীপুর বিসিক সংলগ্ন কুমার নদের পাড়ের প্রায় ৫ একর জমি বিসিকের নামে বরাদ্দের জন্য প্রস্তাব তোলায় তা নিয়ে রাজনৈতিক ও বিভিন্ন মহলের তোপের মুখে পড়ে সে প্রস্তাব থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে। এখানের অবৈধ দখলদাররা রাজনৈতিক নেতা ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় আছে। যে কারণে প্রশাসনও বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করছে।
এলাকা ঘুরে বিসিকের বৈধ শিল্প মালিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ ও পৌর ভূমি কর্মকর্তা সেলিম মিয়ার দেয়া তথ্যে জানা গেছে, বিসিক সংলগ্ন কুমার নদের রাস্তি ও মাদারীপুর মৌজার প্রায় ৫ একর নদী সিকস্তি জমির মালিক বাংলাদেশ সরকার তথা জেলা প্রশাসক। এসব জমিতে অবৈধবাবে বাড়িঘর, দোকানপাট, করাতকল ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করে বসবাস ও ব্যবসা বাণিজ্য করে আসছে বেশকিছু অবৈধ দখলদার। সরকারি জমি অবৈধবাবে দখলের বিষয়টি স্বীকার করে পৌর ভূমি কর্মকর্তা সেলিম মিয়া জানান, এসব দখলদারদের উচ্ছেদের ব্যাপারে জেলা প্রশাসন থেকে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। কয়েকজন দখলদার ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে মালিকানার সত্যতা প্রমাণ করতে চাইলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মূলত এরা সবাই অবৈধ দখলদার।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, শুধু বিসিক এর পাশে নয় কুমার নদের দুই পাড়েই কিছু দখলদার বিভিন্ন সময় ধরেই এ স্থাপনাগুলো নির্মাণ করে আসছে। দখলকৃত জমিতে বেশ কিছু স’মিল, বাড়িঘর, আড়তঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে। নদীর পাড় দখল করায় নদীর স্বাভাবিক গতিপথ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা অবৈধ দখলদারদের তালিকা করেছি, উচ্ছেদের জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করেছি।