মজিদুলের পানের কেরামতি !

স্টাফ রিপোর্টার: চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের ভাষায় ডায়বেটিক সকল রোগের জননী। এ রোগ নিরাময়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা অব্যাহত রেখেছেন। আবিষ্কার করেছেন নানা ওষুধ যা সেবনে এ রোগ কিছুটা নিরাময় হলেও নিমূল অসম্ভব। অথচ একটি পানের পাতাতেই এ রোগ নিমূল সম্ভব বলে দাবী করেছেন মেহেরপুরের গাংনীর সাহারবাটি গ্রামের মজিদুল। আর এ কারণেই দূর দূরান্ত থেকে পান পাতা নিতে ছুটে আসছেন অনেকেই। মজিদুলের নিকটাত্মীয়সহ অনেকেই ডাইবেটিক নিরাময় হচ্ছে বলে দাবী করলেও এমন কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি কেউ। এলঅকায় মজিদুল এখন পান বাবা নামে পরিচিতি পেয়ে গেছেন। গাংনী উপজেলা শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে এক পল্লীর নাম সাহারবাটি। গ্রামের মজিদুল পেশায় একজন দিনমজুর ।
গত রমজান মাসে তিনি স্বপ্নে দেখেন একটি পান পাতায় মন্ত্র পড়ে ডায়বেটিক রোগীদের খাওয়ালে রোগ নিরাময় হয়। একজন মহিলা স্বপ্নে তাকে আদেশ করেন। পরপর তিনবার এ আদেশ পাবার পর মজিদুল পান পাতা পড়ার বিষয়টি প্রকাশ করেন। সে অনুযায়ি প্রথমে তার আত্মীয় একই গ্রামের শরীফুলকে একটি গাছ ও ২১ টি পানপাতা পড়ে ফুক দেন। এতেই নাকি তিনি আরোগ্য লাভ করেছেন। শরীফুল জানান, তিনি তিন বছর যাবৎ ডায়বেটিক রোগে ভুগছিলেন। পান পড়া নিতে আসা কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের আম্বিয়া জানান, তিনি দু’বছর যাবত এ রোগে আক্রান্ত। অনেক চিকিৎসক দেখিয়েছেন কিন্তু আরোগ্য লাভ না করায় পান পড়া নিতে এসেছেন। একই কথা জানালেন গাড়াবাড়িয়া গ্রামের আছিয়া।
তিনি ৭ বছর যাবত ডায়বেটিক রোগে আক্রান্ত। গ্রামের অনেকেই এ পান পড়ার দ্বিমত পোষণ করে জানান, মজিদুল কোন নামাজ কালাম করতো না। সূরাহ কেরাতও জানে না। এখন বিনা পয়সায় পান পড়া দিলেও কয়েকদিন পর টাকা দাবী করবে। আবার অনেকেই জানান, আল্লাহ ইচ্ছা করলে অনেক কিছুই হয় মজিদুল জানান, স্বপ্নে পাওয়া আদেশ তিনি পালন করছেন। রোগ বালাই ভাল করার মালিক আল্লাহ। পান পড়া দিতে তার কোন দাবী নেই। রোগ ভাল হলে তিন কেজি চাল আর আড়াই কেজি চিনি নিয়ে আসেন রোগিরা। এ চাল রান্না করে তা বিলিয়ে দেয়া হয় ছোট ছোট বাচ্চাদের মাঝে। গাংনী বাজার জামে মসজিদের পেশ ঈমাম হাফেজ মাওলানা মোহাম্মদ রুহুল আমীন জানান, ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ি কোন কিছু পড়ে খাওয়ানোটা ঠিক নয়।
তাছাড়া যিনি নামাজ কালাম করেন না তিনি কখনও ভাল স্বপ্ন দেখতে পারেন না। মজিদুল স্বপ্নে যেটা দেখেছেন বলে দাবী করছেন এটি বিশ^াসযোগ্য নয়। গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক (হারবাল) শাহীন আলম জানান, সৃষ্টির সেরা জীব মানুষের দূরারোগ্য ব্যধি সহ নানা রোগ নিরাময়ের জন্য যুগ যুগ ধরে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। আবিষ্কার করছেন নিরাময় যোগ্য ওষুধ। বর্তমান বিজ্ঞানের যুগে মানুষ শুধু ওষুধ আবিষ্কারই নয়, মানুষের নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গও সংযোজন বিয়োজন করছেন। শরীরের কোথায় কি সমস্যা তা খুঁজে বের করছেন সুক্ষাতিসুক্ষ যন্ত্র দিয়ে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে পান সুপারীর সাথে ডায়বেটিক রোগের কোন সম্পর্ক নেই। যিনি এটা রোগীদের দিচ্ছেন এটা প্রতারণা মাত্র।