প্রধান মেনু

ভিয়েতনামে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এঁর ৯৩তম জন্মবার্ষিকী স্মরণ

হ্যানয়, ভিয়েতনাম (৮ আগস্ট): ‘সংগ্রাম-স্বাধীনতা, প্রেরণায় বঙ্গমাতা’- প্রতিপাদ্য নিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এঁর ৯৩তম জন্মবার্ষিকী বাংলাদেশ দূতাবাস, হ্যানয়, ভিয়েতনাম-এ যথাযোগ্য মর্যাদায় এবং ভাবগম্ভীর পরিবেশে স্মরণ করা হয়। দিবসটি স্মরণ ও পালন উপলক্ষ্যে বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ, দোয়া ও মোনাজাত এবং বঙ্গমাতার জীবনী নিয়ে আলোচনা সভা ও স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ সপরিবারে এবং ভিয়েতনামে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিগণ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

স্মরণ সভার প্রারম্ভে রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নের্তৃত্বের কথা সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন। তিনি বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং বঙ্গবন্ধুর পরিবারের অন্য শহিদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব বাঙালির অহংকার, নারী সমাজের প্রেরণার উৎস। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার পর দেশ পুনর্গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে গেছেন। তিনি কেবল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণীই ছিলেন না, বাঙালির মুক্তিসংগ্রামেও তিনি ছিলেন অন্যতম কান্ডারী। বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের নেপথ্যেও প্রধান প্রেরণাদাত্রী ছিলেন মহিয়সী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গৃহবন্দি থেকে এবং পাকিস্তানে কারাবন্দি স্বামীর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে গভীর অনিশ্চয়তা ও শঙ্কা সত্ত্বেও তিনি সীমাহীন ধৈর্য্য, সাহস ও বিচক্ষণতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেন। স্বাধীনতার পরেই বঙ্গমাতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজে আত্ননিয়োগ করেন। বিশেষ করে নির্যাতিত মা-বোনদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন এবং সামাজিকভাবে তাদের প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যেগ নেন।

রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, বঙ্গমাতা ছিলেন নির্লোভ, নিরহংকার ও পরোপকারী। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পত্নী হয়েও তিনি ‘ফাস্ট লেডি’ পরিচয়ে পরিচিত না হয়ে সবসময় সাদামাটা জীবনযাপন করতেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে স্বামী-পুত্র-পুত্রবধূসহ নিকট আত্মীয়ের সাথে ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে নির্মমভাবে শহিদ বঙ্গমাতা তাঁর জীবনের যে আদর্শ ও দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তা যুগে যুগে বাঙালি নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

আলোচনা শেষে বঙ্গমাতার কর্মময় জীবনের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে শিশু ও কিশোরদের উপস্থিতিতে কেক কেটে দিবসটি উদ্যাপন করা হয় এবং আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে হালকা আপ্যায়নের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে।