প্রধান মেনু

ভালুকায় কাল বৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

ভালুকা ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ শুক্রবার সন্ধার পর ভালুকা উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কাল বৈশাখী ঝড়ে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ইউনিয়নএর কয়েকটি গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। শুক্রবার(১৭মে) সন্ধায় ইফতারের আগ মুহুর্তে এ ঘটনা ঘটে।স্বরণকালের সবচেয়ে বড় ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার হবিবরবাড়ী ইউনিয়নের গাংগাটিয়া ও শিরিচালা গ্রাম গতকাল সন্ধায় কালবৈশাখী ঝড়ে বসত বাড়িঘর,গাছ-পালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলার সব জায়গাতেই কমবেশী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে । তার মধ্যে উপজেলার হবিবরবাড়ী ইউনিয়নের ঝালপাজা, লবন কোঠা, আমতলী, গাংগাটিয়া ও শিরিরচালা গ্রামে শুক্রবার সন্ধায় কালবৈশাখী ঝড়ে দুই শতাধিক বাড়িঘরের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে। বড়বড় গাছ উপড়ে ফেলে দেয়। ঝড়ে কয়েকটি ইউনিয়নের আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা বাগান,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বসত ঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ের তান্ডবে হবিরবাড়ী ঝালপাঝা সড়কের দুই দিকে অসংখ্য ঘরবাড়ী গাছপালা ভেঙ্গে ৭/৮ টি পল্লী বিদ্যুতের খুটি ভেঙ্গে ফেলে দিয়েছে।

ঝালপাজা গ্রামের কামরুল ও শরীকদের ৭/৮ ঘর, চেচুয়া নন্দীপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের চাল, সাংবাদিক জসীম উদ্দীনের একটি ঘর,শামছুল হকের ৪টি ঘর, নলুয়াকুড়ি গ্রামে কাদির ফকিরের বাড়ী, লবন কোঠা গ্রামের জুলহাস উদ্দীনের ৫ টিঘর, রাজ্জাকের ৪ টি ঘর, গাংগাটিয়া গ্রামে জসীম মিয়ার ছড়ি সহ ১৬শ কলাগাছ সম্পুর্ণ ফেলে দিয়েছে। একই গ্রামে হাফেজ সেখ, আব্দুল আলীম, আব্দুস সামাদ, মিলন মিয়া, জজ মিয়া, আবুল কাসেম, আব্দুর রহমান, আঃ মোতালেব, হযরত আলী, আইয়ূব আলী সহ প্রায় দুই শতাধিক লোকের কাঁচা ঘরবাড়ী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

একই গ্রামে মসজিদ সহ অসংখ্য ঘর বাড়ির চাল ঝড়ে উড়িয়ে নিয়ে গেছে। সারা এলাকায় বিদ্যুতের খুটি ভেঙ্গে তার ছিড়ে একাকার হওয়ায় শুক্রবার সন্ধ্যা হতে ওইসব গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এলাকার ক্ষতি গ্রস্থ লোকজনের ঘরের চাল না থাকায় খোলা আকাশের নীচে অবস্থান করছেন। শনিবার সকালে ভালুকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবিরবাড়ী, ঝালপাজা, গাংগাটিয়া,পাড়াগাঁও, সিড়ির চালা,লবনকোঠা সহ কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শন করেন।

এ সময় তিনি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মিলন মিয়াকে ঘর মেরামতের জন্য ব্যাক্তিগত তহবিল হতে আর্থিক সাহায্য করেন। ঝড়ের তান্ডবে হবিরবাড়ী ঝালপাঝা সড়কের দুই দিকে অসংখ্য ঘরবাড়ী গাছপালা ভেঙ্গে ৭/৮ টি পল্লী বিদ্যুতের খুটি ভেঙ্গে ফেলে দিয়েছে।

ঝালপাজা গ্রামের কামরুল ও শরীকদের ৭/৮ ঘর, চেচুয়া নন্দীপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টিনের চাল, সাংবাদিক জসীম উদ্দীনের একটি ঘর,শামছুল হকের ৪টি ঘর, নলুয়াকুড়ি গ্রামে কাদির ফকিরের বাড়ী,বড়চালা গ্রামের হাজী আবুল কাশেম এর কাঠাল, আম ও মেহগনী বাগান ভেঙ্গে- উপড়ে ফেলে অর্ধলক্ষ টাকার ক্ষতি, লবন কোঠা গ্রামের জুলহাস উদ্দীনের ৫ টিঘর, রাজ্জাকের ৪ টি ঘর, গাংগাটিয়া গ্রামে জসীম মিয়ার ছড়ি সহ ১৬শ কলাগাছ সম্পুর্ণ ফেলে দিয়েছে।

অপরদিকে উপজেলার ভালুকা ইউনিয়নের হাজির বাজার এলাকায় একটি বাড়ীতে বজ্রপাত পরলে আগুন ধরে দুটি ঘর পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ভালুকা ফায়ার সাভির্স কর্মীরা ঘটনাস্থলে আগুন নিভানোর চেষ্টা করে। এ সময় প্রচন্ডবেগে ঝড় বইতে শুরু করে। ঘুর্নিঝড়ে গাছ ভেঙ্গে স্কুল ঘরের চালার উপর পড়ে অফিস,শ্রেনী কক্ষসহ লন্ডভন্ড হয়ে গেছে ভালুকার পাখিরচালা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন জানান, শুক্রবার সন্ধায় বয়ে যাওয়া ঘুর্নিঝড়ে বিদ্যালয় চত্বরে থাকা একটি বড় গাছ উপড়ে বিদ্যালয়ের চালার উপর আছড়ে পড়ে। এতে বিদ্যালয়ের ৭টি শ্রেনী কক্ষ,মাল্টিমিডিয়া সামগ্রীসহ ও অফিস কক্ষ তছনছ হয়ে গেছে। জরুরী সংস্কার না হলে বিদ্যালয়ে ক্লাশ করানো সম্ভব হবেনা। তিনি ঝড়ের বর্ননা দিতে গিয়ে বলেন,যেভাবে ঘরটি ভেঙ্গেছে স্কুল বন্ধ না থাকলে শিক্ষার্থীদেরও ক্ষয়ক্ষতির আশংকা ছিল। স্কুল কক্ষ সংস্থারের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন। এসব এলাকার জনসাধারণের ব্যাপক ভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মুবিনুর রহমান ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলটি পরিদর্শন করেছেন। শনিবার সকাল থেকেই ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন ভালুকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ। পরিদর্শন কালে চেয়ারম্যান ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে আর্থিক সহায়তাও প্রদান করেন। সাংসদ, উপজেলা প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শণ করে ক্ষয় ক্ষতির পরিমান নির্নয় করছেন।