ভালুকায় অবশেষে পরিচয় মিলল পাগলী মায়ের

উসমান গনি তুহীন, ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধিঃ ময়মনসিংহের ভালুকা মডেল থানা ওসি মাইন উদ্দির অন্তরিকতায় অবশেষে পরিচয় মিলল পাগলী মায়ের। মানসিক ভারসাম্যহীন নবজাতকের মা রেহেনা মানিগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জামিরতা গ্রামের কোহিনুরের স্ত্রী রেহেনাকে নিতে থানায় ছুটে আসেন তার স্বামী, ছোট ভাই সাহাদৎ ও তার বড় মেয়ে। ১৩ জুন (বুধবার) দুপুরে ভালুকা হাসপাতালে রেহেনাকে নবজাতকসহ তার স্বজনকে কাছে হস্তান্তর করেন ওসি মাইন উদ্দিন। এ সময় থানার ওসি (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম, ওসি (অপারেশন) আবুল কালাম আজাদ ও স্থানীয় ইলেট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকগণ।
অটিস্টিক রেহেনার স্বামী কোহিনুর জানান তার স্ত্রী বিদেশে থাকতো বিদেশ থেকে দেশে ফিরে হটাৎ করেই সে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পরে । অনেক চিকিৎসা করেও তাকে সুস্থ্য করে তোলা। প্রায় ৫ বছর যাবৎ সে নিখোঁজ। বিভিন্ন জায়গায় খোজাঁখোজি করেও তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। ভালুকায় বিভাবে আসলো এবং এই বাচ্চার পরিচয় কি আমরা কিছুই জানিনা। আর স্ত্রীর ১ মেয়ে ও ২ ছেলে সন্তান রয়েছে। ওকে পেয়ে আমরা সবাই আন্দন্দিত। ছোট ভাই সাহাদৎ বলেন আমরা ওসি সাহেবের প্রতি কৃতজ্ঞ। উনার আন্তরিকতায় ৫ বছর পর আমার একমাত্র বোনকে আমরা ফিরে পেয়েছি। উল্লেখ্য গত ৩১ মে (শুক্রবার) জুম্মার নামাজের পর ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বহুলী গ্রামের সোহাগের বাড়ির বাহিরের দিকের বারান্দায় মানসিক ভারসাম্যহীন (৩৫) এক নারী প্রসবের ব্যাথায় ছটফট করতে থাকেন।
ওই নারীর ডাক-চিৎকারে বিলকিস বেগম নামের এক মহিলা টের পান। পরে কিছুণের মধ্যেই বিলকিছ বেগমের হাতেই ওই মানসিক ভারসাম্যহীন নারী ফুটফুটে এক ছেলে নবজাতক প্রসব করেন। এরপর ওই নারীর নাম-পরিচয় জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন প্রশ্নের উত্তর না দিলে ও তাঁর আচরনে স্থানীয় মানসিক ভারসাম্যহীন বলে চিহ্নত করে । পরে এই ঘটনাটি ভালুকা মডেল থানায় জানান স্থানীয়রা । পরে থানার ওসি (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম ওই নারী ও নবজাতককে উদ্ধারের জন্য ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে একজন চিকিৎসকসহ অ্যাম্বুলেন্সের সহযোগিতা চান। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইউএনও কে জানান হাসপাতালের একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটি নষ্ট । রাত ১০ টার দিকে তাসলিমা বেগম নামের ওই স্থানীয় মহিলা আবার মোঠো ফোনে ওসি (তদন্ত) মাজহারুল ইসলামকে জানান, প্রসবের পর ওই নারীর ব্যাপক রক্ত রণ হচ্ছে নবজাতকও তেমন নরাচড়া করছে না।
ওসি (তদন্ত) মাজহারুল ইসলাম থানা অফিসার ইনচার্জ মাইন উদ্দিনের দিক দিক নির্দেশনায় একটি নোয়া গাড়ি ভাড়া করে মধ্য রাতেই নবজাতকসহ মাকে উদ্ধার করে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তাৎক্ষনিক হাসপাতালে ওই নারী ও নবজাতকের খোঁজ নিতে রাতেই হাসপাতালে ছুটে যান ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মাইন উদ্দিন। ওই নারী ও নবজাতক সুস্থ্য না হওয়ার পর্যন্ত চিকিৎসাসহ সব ধরনের ব্যয়ভার বহন করেন ওসি মাইন উদ্দিন। পামাপাশি ওসি নবজাতক এবং মায়ের পরিচয় খোঁজে বের করতে নানা রকম চেষ্টা অব্যহত রাখেন। এ ঘটনায় এলাকায় ও গণমাধ্যমে ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। অবশেষে মানসিক ভারসাম্যহীন মা রেহেনার পরিচয় বের করতে সক্ষম হয়।