বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে রাষ্ট্রপতির বাণী

ঢাকা, ২৪ অগ্রহায়ণ (৯ ডিসেম্বর) : রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“মানবাধিকার সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘মানবাধিকার দিবস’ উদ্যাপনের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই। তরুণরা জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার। এ প্রেক্ষাপটে মানবাধিকার দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য “মানবাধিকার সুরক্ষায় তারুণ্যের অভিযাত্রা” অত্যন্ত সময়োপযোগী বলে আমি মনে করি। মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘ কর্তৃক মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। এরপর থেকে প্রতি বছর মানবাধিকার বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডিসেম্বরের ১০ তারিখে মানবাধিকার দিবস পালিত হয়ে আসছে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সাম্য, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ১৯৭২-এর সংবিধানে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সকল মানবাধিকারের নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়। মানবাধিকার সুরক্ষাকল্পে সরকার ২০০৯ সালে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা করে। একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসাবে এ কমিশন মানবাধিকার সুরক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখা রাষ্ট্রের পাশাপাশি সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব । আমি নারী, শিশু ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসহ সকল নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষায় সরকারি-বেসরকারি সংস্থার পাশাপাশি সর্বস্তরের জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশ ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছে। রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে মানবিক ও দায়িত্বশীল নীতির অনন্য নেতৃত্বের স্বীকৃতি হিসাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন।
২০১৮ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের ৭৩তম অধিবেশনে বাংলাদেশ ১৭৮টি রাষ্ট্রের ভোট পেয়ে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে যা মানবাধিকার রক্ষায় সরকারের অব্যাহত প্রচেষ্টার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বলে আমি মনে করি। আমি আশা করি মানবাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ভুক্তভোগীদের প্রতিকার পাওয়ার পথ সুগম করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমি ‘মানবাধিকার দিবস’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করছি। খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”