বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

ঢাকা, ২৪ অগ্রহায়ণ (৯ ডিসেম্বর) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :
“বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উদ্যোগে ১০ই ডিসেম্বর ‘বিশ্ব মানবাধিকার দিবস’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষায় তরুণ সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তাই দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘মানবাধিকার সুরক্ষায় তারুণ্যের অভিযাত্রা’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তরুণ বয়সেই মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেন। তিনি আজীবন বঞ্চিত করেছেন।
মানুষের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য বারবার কারাবরণ করেছেন। জাতির পিতা চেয়েছিলেন শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত বাংলাদেশ গড়তে যেখানে প্রতিটি মানুষ মানবিক মর্যাদা, সাম্য ও ন্যায়বিচারের নিশ্চয়তা লাভ করবে। তিনি ১৯৭২ সালে প্রণীত বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করেন। আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আমরা আশ্রয় দিয়েছি। তাঁদের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সকল সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তাসহ নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করে প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
আমরা দেশের জনগণের মানবাধিকার সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর। আমরা সকল মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করার মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছি। জাতির পিতার হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করা হয়েছে। ’৭১ এর যুদ্ধাপরাধী-মানবতাবিরোধীদের বিচারের রায় কার্যকর করা হচ্ছে। আমরাই ২০০৯ সালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন প্রণয়ন করি। সরকার ইতোমধ্যে কমিশনকে শক্তিশালী করার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে কমিশন স্বাধীন এবং নিরপেক্ষভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
বর্তমান সরকারের সময় বাংলাদেশ তিনবার জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছে। আমরা মানবাধিকার সুরক্ষার লক্ষ্যে শ্রমিকের অধিকার, শিশু, নারী, প্রতিবন্ধীর অধিকারসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কনভেনশনে স্বাক্ষর ও অনুসমর্থন করেছি। এ সকল কনভেনশন কার্যকর করার লক্ষ্যে আমাদের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। পিছিয়ে-পড়া জনগোষ্ঠীসহ সকল মানুষের মানবাধিকার সুরক্ষা, সমঅধিকার, অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিতকরণে সরকার ইতোমধ্যেই বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে এবং ভবিষ্যতে আরো করবে।
আমি মানবাধিকার সুরক্ষার কাজে নিয়োজিত জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী, সিভিল সোসাইটি, গণমাধ্যম, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আরো কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। আমি বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি। জয় বাংলা, জয়
বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”