প্রধান মেনু

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

ঢাকা, ২ আষাঢ় (১৬ জুন) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ১৭ জুন বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন: “বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২১’ পালিত হতে যাচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য – ‘Commit to quit’, ‘আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি, জীবন বাঁচাতে তামাক ছাড়ি’। তামাক ব্যবহার একটি প্রাণঘাতী নেশা এবং কোভিড-১৯ মহামারিকালে এর ব্যবহার মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। তাই এ বছরের প্রতিপাদ্য বিষয়টি যথার্থ বলে আমি মনে করি।

তামাক সেবন তথা ধূমপান, জর্দা ও গুলের ব্যবহার প্রাণঘাতী নেশা। তাছাড়া পরোক্ষ ধূমপানও অধূমপায়ীদের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। গবেষণায় জানা গেছে, তামাক সেবনের ফলে সৃষ্ট বিভিন্ন রোগ যেমন : হৃদরোগ, ক্যান্সার, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবীতে বছরে ৮০ লক্ষাধিক ও বাংলাদেশে ১ লক্ষ ৬১ হাজারের অধিক মানুষ মারা যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তামাকজাত পণ্যের ব্যবহারকে বৈশ্বিক মহামারি হিসাবে চিহ্নিত করে এর ব্যবহার হ্রাস করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ‘ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)’ প্রণয়ন করেছে। এফসিটিসি’র আলোকে ২০১৩ সালে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫-এর সংশোধন এবং ২০১৫ সালে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা’ জারি করা হয়েছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে অর্থের যোগান নিশ্চিতকরণে সরকার ২০১৪-১৫ অর্থবছর হতে সকল প্রকার তামাকজাত দ্রব্যের ওপর ১% হারে সারচার্জ আরোপ করেছে এবং ২০১৭ সালে ‘স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা’ প্রণয়ন করা হয়েছে। ফলে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়নের পথ সুগম হয়েছে।

জাতিসংঘ তামাককে উন্নয়নের হুমকি বিবেচনায় নিয়ে এফসিটিসির কার্যকর বাস্তবায়ন ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণকে অন্তর্ভুক্ত করে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)’ প্রণয়ন করেছে। বাংলাদেশ সরকার এসডিজি অর্জনে অঙ্গীকারবদ্ধ। সে লক্ষ্যে আমার সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়টিকে ৭ম ও ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ‍যুক্ত করেছে। সর্বোপরি, দক্ষিণ এশীয় স্পিকার্স সামিট ২০১৬-এ আমি আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছি। সে লক্ষ্যে আমার সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বে পরিণত হবে ইনশাআল্লাহ। দেশের ‍উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে জনগণকে সুস্থ ও কর্মক্ষম রাখার গুরুত্ব অপরিসীম। এজন্য সকলকে ধূমপান ও তামাকের ভয়াল নেশা থেকে দূরে রাখতে হবে। এছাড়া, আমার সরকার মাদকের বিরুদ্ধেও জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণের এ সময়ে আমাদের সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে। আমি দেশবাসীকে আহ্বান জানাই, আপনারা এ মহামারি মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন এবং সকল তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার পরিহার করুন।

আমি ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস-২০২১’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।