বিশ্ব জাকের মঞ্জিলে বিশ্বের মানুষের ঢল

মোঃমাহফুজুর রহমান বিপ্লব, ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের সদরপুরে আটরশি বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের পবিত্র উরস শরীফে অংশ নিতে মানুষের স্রোত নেমেছে। আজ শনিবার উরসের প্রথম দিনেই লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছে এই জনপদ। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ বারের উরসে অন্যবারের তুলনায় জনসমাগম বেশি হবে বলে তারা ধারণা করছেন। গত শুক্রবার বাদ জুমা শাহ্ সূফী খাজাবাবা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহবের পবিত্র রওজা শরীফ জেয়ারতের মধ্য দিয়ে পবিত্র উরসের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
এর আগে বুধবার থেকেই শুরু হয় বিভিন্ন পথে মুরিদদের বিশ্ব জাকের মঞ্জিলমুখী কাফেলার আগমন। বাস, ট্রেন, লঞ্চ, ট্রলার সহ বিভিন্ন উপায়ে এই কাফেলার সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। সমবেতদের অবস্থানের জন্য সেখানে কয়েক বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শামিয়ানা টাঙিয়ে অসংখ্য অস্থায়ী ক্যাম্প গড়ে তোলা হয়েছে। এবার বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের ভিতর-বাইরে ছাড়াও এই শামিয়ানার বিস্তৃতি ছাড়িয়ে গেছে মাদ্রাসা ভবনের পেছনে হেলিপোর্টের উত্তর প্রান্তেও। দেশের দুর-দুরান্ত ছাড়াও বিদেশ থেকেও আসছেন মুরিদান ও মেহমানগণ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কয়েক বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের মূল সীমানার ক্যাম্পগুলো ইতিমধ্যেই পরিপূর্ণ হয়ে গেছে সমবেতদের অবস্থানে। এখন সীমানার বাইরের ক্যাম্প ছেড়ে বিভিন্ন খালি স্থানেও তারা অবস্থান করছেন। বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের সুবৃহত মসজিদটিও পরিপূর্ণ এখন মুসুল্লীদের ভীড়ে। বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে জাকেরগণ নিয়োজিত রয়েছেন খেদমতে। এসব কাজে নিযুক্ত রয়েছেন কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবী ও সবুজ বাহিনী। পাশাপাশি পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও মোতায়ন রয়েছে। উরসের বাইরে মেলা মিলেছে। সেখানে বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন দোকানীরা।
প্রায় ৭০ বছর আগে ক্ষুদ্র পরিসরে হযরত মাওলানা শাহ্ সূফী খাজা ফরিদপুরী (কুঃছেঃআঃ) ছাহেবের হাতে গড়ে তোলা জাকের ক্যাম্প সময়ের পরিক্রমায় আজ বিশাল এক ইসলামীক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। তার প্রচেষ্টাতেই এখানে গড়ে উঠেছে দেশের অন্যতম বৃহৎ মসজিদের দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। চারপাশের চারটি সুবৃহৎ মিনারসহ মসজিদের মূল ভবনের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দেশের গন্ডি পেরিয়ে সারাবিশ্বে আজ সুপরিচিত এই আটরশী বিশ্ব জাকের মঞ্জিল। বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের কর্মী গ্রুপের বিভাগীয় প্রধান কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী জানান, দেশ-বিদেশ হতে এবারের উরসে আশেকান-জাকেরান ও মুরিদানগণ এখনো আসছেন। অন্যবারের তুলনায় এবার লোক সমাগম অনেক বেশি হবে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, চারদিনব্যাপী এই উরসে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, জিকির আসগার, মোরাকাবা-মোশাহেদা, ওয়াজ-নসিহত, মিলাদ-মাহফিল এবং ফরজ ও সুন্নাত এবাদতের পাশাপাশি নফল এবাদত অনুষ্ঠিত হবে। আগামী মঙ্গলবার ফজর নামাজের পর দেশ ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হবে। মোনাজাত পরিচালনা করবেন গদীনশীন পীর আলহাজ্ব মাহ্ফুজুল হক মুজাদ্দেদী ছাহেব।