বিজয় অপেক্ষায় বাউফলবাসী
মোঃ শফিকুল ইসলাম,বাউফল প্রতিনিধিঃ বিজয়ের মাসে আরো একটা বিজয়ের ৩০সে ডিসেম্বর অপেক্ষায় বাউফলবাসী। আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাতীয় সংসদের চীফ হুইপ আ.স.ম. ফিরোজকে নিয়ে এমনটাই আশা করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা- কর্মী, সমর্থক ও ভোটাররা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাউফলের গ্রামে গ্রামে ও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এবং নেতাকর্মীরা উন্নয়ন ও শেখ হাসিনার প্রতিক নৌকায় ভোট দেওয়ানোর আহব্বান জানিয়ে এমনভাবেই তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করছেন। এছাড়া বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে আলাপ করলে তারাও নৌকার বিজয় নিয়েই তাদের মতামত ব্যক্ত করছেন।
আ.স.ম. ফিরোজ ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবার অংশ নিয়ে সর্ব কণিষ্ঠ সংসদ সংসদ্য হিসেবে জয়লাভ করেন। এরপর থেকে তার ছাত্রজীবনের অভিজ্ঞতা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে বাউফলের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় সক্রিয় নেতাকর্মীদের নিয়ে আওয়ামী লীগ ও সকল অঙ্গ সংগঠনের কমিটি গঠন করে দলের মজবুত অবস্থান নিশ্চিত করেন এবং কমিটি গুলো নিয়মিত আপডেটও করে যাচ্ছেন। এরপর আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
যার ফলশ্রুতিতে ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একজন শিক্ষিত, ভদ্র ও নন্দিত সাদা মনের রাজনৈতিক ব্যাক্তি হিসেবে বাউফলের সাধারন মানুষের কাছে আ.স.ম. ফিরোজ অদম্য সিংহ হিসেবেই পরিচিত। দীর্ঘ সময় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য থাকায় ২০০৯ সালের সংসদে হুইপ এবং ২০১৪ সাল থেকে চীফ হুইপের দায়িত্ব পালন করে অসছেন। ২০১৮ সালের বিজয়ের মাসে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করে সপ্তম বারের মতো সংসদ সদস্য হবেন বলে আশায় বুক বেধে রয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীসহ সাধারন ভোটাররা।
বাউফল সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম জানান, আ.স.ম. ফিরোজ প্রতিহিংসায় অবিশ্বসী একজন রাজনীতিবিদ। দেশি বিদেশী ষরযন্ত্রের ফসল ২০০১ সালের নির্বাচনে আ.স.ম. ফিরোজকে জোর করে হারানো হয়েছিল। ওই সময়টায় তৎকালিন সংসদ সদস্য ও তার নেতাকর্মীদের অন্যায়-অত্যাচার বাউফলবাসী হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিল। এমনকি লাঞ্চনার হাত থেকে আ.স.ম. ফিরোজও রেহাই পাননি। কিন্তু আ.স.ম. ফিরোজ ২০০৮ ও ২০১৪ সালে পূণরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে বাউফলে প্রতিহিংসার রাজনীতি করেননি। যার কারণে বাউফলে দলমত নির্বিশেষে আ.স.ম. ফিরোজ সকলের কাছেই অত্যন্ত পছন্দের মানুষ। একারণেই আশা করা হচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আ.স.ম. ফিরোজ সপ্তমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন।
বাউফল উপজেলা আওয়ামীলী সাধারন সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার জানান, আ.স.ম. ফিরোজ এযাবৎকাল তার রাজনৈতিক জীবনের সকল অর্জনই যুদ্ধ করতে করতে জয় করেছেন। নির্বাচনের সময় এলেই বাউফলে জনসমর্থনহীন আওয়ামী লীগ নামধারী একটি কুচক্রী মহল তার বিরোধিতা করে আসছে। নওমালা ইউপি আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পদক ও সাবেক চেয়ারম্যান এ্যাড কামাল হোসেন বিশ্বাস জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে এবং চীফ হুইপ আ.স.ম. ফিরোজের প্রচেষ্টায় বাউফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত আমুল পরিবর্তন হয়েছে।
বাউফলে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই দ্বিতল, তৃতল এমনকি চারতলাও নতুন ভবন নির্মিত হয়েছে, কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের হাতে বছরের প্রথম দিনেই নতুন বই উপহার দেয়া হচ্ছে এবং শিক্ষা উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়নে নতুন ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মিত হয়েছে। বাউফলের সকল দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ে আনা হয়েছে। বাউফলে শতকরা ৯০ ভাগ পরিবারকে বিদ্যুতের আওতায় আনা হয়েছে। রাস্তাঘাট, অসংখ্য ব্রিজ, কালভার্ট, সাইক্লোন শেল্টার নির্মান ও ডিপ টিউবওয়েল স্থাপণ করা হয়েছে।
এগুলো মানুষের কাছে দৃশ্যমান। এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যহত রাখতে অবশ্যই বাউফলের ভোটাররা নৌকায় ভোট দিয়ে আ.স.ম. ফিরোজকে সপ্তমবারের মতো ভোট দিয়ে সংসদে পাঠাবেন। রাজনৈতিক দলের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত নয় বাউফলের বিভিন্ন এলাকার শতাধিক ভোটারের সাথে কথা বললে তারা জানান, দেশে এখন শান্তি বিরাজ করছে। কোন চুরি, ডাকাতি, বোমাবাজি, ছিনতাই নাই, রাস্তাঘাট ভাল, বিদ্যুৎ পাচ্ছি, টিভিও দেখছি, কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ওষুধ পাওয়া যায়, এমন শান্তি যারা দিয়েছেন তাদেরকেই ভোট দেব ।
এসকল ভোটাররা কোন ঝক্কি-ঝামেলা পছন্দ করেন না। তাদের ইঙ্গিত নৌকার দিকেই। বেশ কিছু নতুন ভোটারের সাথে কথা বললে তারা জানান, আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার অন্যতম কারিগর হচ্ছে আওয়ামীলীগের সভানেত্রী সেখ হাসিনা। বিশে^র সাথে প্রতিযোগিতা করেই আজকের অবস্থানে বাংলাদেশ। এধারা অব্যহত রাখতে নৌকাকেই তাদের পছন্দ। আ.স.ম. ফিরোজ ১৫টি ইউনিয়নে দলকে তৃণমূল পর্যায়ে সুসংগঠিত করেছেন। একাজে সে অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিচ্ছেন।
অনেক মান অপমান সহ্য করে অহিংস রাজনীতির ক্ষেত্র তৈরী এবং সেটা অক্ষুন্ন রেখেছেন। বিভিন্ন পরিবেশে নির্বাচন করার কুটকৌশলও তিনি ভাল জানেন। এমন অবস্থায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাউফলে নৌকাই অনেকটা এগিয়ে রয়েছে। ৪৮৭ বর্গ কিলোমিটার আয়তন নিয়ে সংসদীয় আসন পটুয়াখালী-২ বাউফল উপজেলা। এ উপজেলায় রয়েছে ১৫টি ইউনিয়ন এবং ১ টি পৌরসভা। আসনটিতে মোট জনসংখ্যা ৩ লাখ ৮০ হাজার ৮৫৭ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৯৩ হাজার ৩০৯ জন এবং মহিলা ১ লাখ ৮৭ হাজার ৫৪৮ জন। এ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৫২ হাজার ৬২১ জন। এদের মধ্যে মহিলা ভোটার ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৪৫ জন এবং পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৬ জন। এ আসনে ৩১ হাজার ৫০৫ জন নতুন ভোটার রয়েছেন।