বিচার বিভাগের উন্নয়নে সরকারের উদ্যোগ তখনই সফল হবে যখন বিচার বিভাগ জনগণের প্রত্যাশা মেটাতে সক্ষম হবে —আইনমন্ত্রী

ঢাকা, ৭ চৈত্র (২১ মার্চ) : আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিচার বিভাগের উন্নয়নে সরকারের উদ্যোগসমূহ তখনই সফল হবে যখন বিচার বিভাগ জনগণের প্রত্যাশা মেটাতে সক্ষম হবে। জনগণের শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে আদালত তার মর্যাদা ধরে রাখতে পারবে। দায়িত্ব পালনে নিরপেক্ষ থেকে সর্বোচ্চ দক্ষতা ও সততা দিয়ে বিচারকরা আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আন্তরিক হবেন।
আজ ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং সমপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য অনলাইনে আয়োজিত ৭ম ওরিয়েন্টশন কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
মামলাজট কমিয়ে আনাকে বিচার বিভাগের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, সরকার ও সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি বিচারকদের উদ্ভাবনীমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ মামলাজট কমাতে সাহায্য করবে।
বিচারিক কর্মঘণ্টার সঠিক প্রয়োগ, কার্যকর মামলা ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, দক্ষ আদালত ব্যবস্থাপনা এবং সর্বোপরি বিচারকদের ‘আইডিয়াল লিডারশিপ’-এর মাধ্যমে মামলার বোঝা কমতে পারে। তিনি বলেন, বিচার প্রক্রিয়ায় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে কার্যকর সমন্বয় সাধনের মাধ্যমেও মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব।
মন্ত্রী বলেন, একবিংশ শতাব্দীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বিচার বিভাগকে আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে অনেক পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আদালত ভবন নির্মাণ, নতুন বিচারক নিয়োগ এবং বিচারকদের বেতন বৃদ্ধিসহ দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ ও গাড়ি সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।
মামলাজট কমাতে বিচার ব্যবস্থায় বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থাকে অধিক কার্যকর করার লক্ষ্যে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসকে ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আইনে সংশোধনী এনে মামলার বিভিন্ন স্তরে সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দ্রুততম সময়ে সাক্ষীর হাজিরা নিশ্চিত করার জন্য গত দুদিন পূর্বে বিদ্যমান সমন জারি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি মোবাইল এসএমএস-এর মাধ্যমে মামলার তারিখ সম্পর্কে সাক্ষীকে অবগত করার কার্যক্রমটির উদ্বোধন হয়েছে।
প্রথম পর্যায়ে পাইলটিং-এর মাধ্যমে নরসিংদী ও কুমিল্লা জেলায় উক্ত কার্যক্রম শুরু হলেও এর কার্যকর মূল্যায়নের পর তা সারাদেশে বাস্তবায়ন করা হবে। কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সরকার ভার্চুয়াল কোর্ট চালু করে জনগণের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকারকে সমুন্নত রেখেছে। অধিকন্তু ২৮০০ কোটি টাকার ই-জুডিসিয়ারি প্রকল্প একনেকে পাস হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খোন্দকার মূসা খালেদ এর সভাপতিত্বে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মোঃ গোলাম সাওয়ার এবং ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মোঃ গোলাম কিবরিয়া অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।