প্রধান মেনু

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী 

ঢাকা, ৩০ মাঘ (১৩ ফেব্রুয়ারি) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ‘বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল দিবস ২০২১’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :“১৪ ফেব্রুয়ারি প্রেস কাউন্সিল দিবস পালন হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে আমি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।

স্বাধীনতার মহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবাদপত্রের স্বাধীনতারক্ষা এবং এই পেশাকে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিপূর্ণ করার লক্ষ্য নিয়ে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। তিনি ১৯৭৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রেস কাউন্সিল আইন প্রণয়ন করেন। দেশের সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা পেশাকে নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক করার লক্ষ্য নিয়ে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সুদৃঢ় করার প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে। প্রেস কাউন্সিল ২০টি জেলা প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক বইবিতরণ এবং গোপালগঞ্জ ও কুমিল্লা প্রেসক্লাবে মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু-কর্ণার স্থাপন করেছেন জেনে প্রেস কাউন্সিলকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

বর্তমান সরকার তথ্যের অবাধপ্রবাহে বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে সংবাদপত্র ও অন্যান্য গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন ও তথ্য কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেশের গণমাধ্যমের বিকাশে ও উন্নয়নে বর্তমান সরকার অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের এবারের নির্বাচনি ইশতেহারেও গুরুত্ব পেয়েছে এ পেশার উন্নয়নের বিষয়টি। সাংবাদিকদের জন্য নবম ওয়েজ বোর্ড গঠন ও গণমাধ্যমকর্মীদের পেশাগত নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রেসক্লাবকে আধুনিকায়ন করে তোলার জন্য আর্থিক অনুদান দেয়া হচ্ছে। জাতীয় প্রেসক্লাবে গড়ে তোলা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু মিডিয়া সেন্টার। যেখানে সাংবাদিকরা পাবেন পেশাগত সবধরনের সুযোগ। বর্তমানে দেশে সংবাদপত্রছাড়াও ৪৪টি বেসরকারি টেলিভিশন, ২২টি এফএম রেডিও, ৩২টি কমিউনিটি রেডিও, অসংখ্য অনলাইন-সংবাদপত্র, অনলাইন-নিউজপোর্টাল চালু রয়েছে।

আমাদের সরকার গণমাধ্যমসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহকে পূর্বের তুলনায় অধিকতর শক্তিশালী ও গতিশীল করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ‘বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ২০১৪’ প্রণয়ন করেছে। এ আইনের আওতায় একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। সাংবাদিক কল্যাণ তহবিল গঠনসহ বিভিন্ন সহায়তাকার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সাংবাদিক সহায়তা ভাতা-অনুদান নীতিমালা আওতায় সাংবাদিকদের অনুদান দেয়া হচ্ছে। সিড মানি ও অনুদানসহ কল্যাণ ট্রাস্ট করে দেয়া হয়েছে।

২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্ত সাংবাদিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আর্থিক সহায়তার অংশ হিসাবে ১০,০০০ টাকা হারে ৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা সারাদেশের ৩,৩৫০ জন সাংবাদিকের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। করোনাকালীন সময় প্রেসক্লাব ও সাংবাদিকদেরকে আর্থিক অনুদান দেয়া হয়েছে।

করোনা-ভাইরাস বৈশ্বিক মহামারিতে বাংলাদেশের গণমাধ্যম সক্রিয় থেকে করোনা-ভাইরাসের সঠিক তথ্য জনগণের মাঝে তুলে ধরেছে। এজন্য গণমাধ্যমে নিয়োজিত কর্মীদের আন্তরিক অভিনন্দন এবং গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপালন করতে গিয়ে করোনা-ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।

আওয়ামী লীগ সরকার সাংবাদিক-বান্ধব। প্রতিবছর সাংবাদিকদের আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। অসুস্থ বা নানা কারণে সমস্যায় পড়লে সাংবাদিকদের আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়। অনেক সাংবাদিক প্লট পেয়েছেন।

দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য আমাদের সরকারের গৃহীত ১০টি বিশেষ উদ্যোগ ও জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (SDG) অর্জনে যে প্রয়াস দেশে অব্যাহত রয়েছে, সেখানে সাংবাদিকদের দায়িত্ব অনন্য।

আমি আশা করি, সাংবাদিকগণ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ-পরিবেশনের মাধ্যমে দুর্নীতি, মাদক, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ করে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম-আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে কার্যকর ভূমিকা পালন করবেন।

আমি বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল দিবস ২০২১ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সফলতা কামনা করি। একইসাথে প্রেস কাউন্সিল পদক ২০২১ প্রাপ্ত সাংবাদিকদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু

বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”