প্রধান মেনু

বাংলাদেশে ইফাদের বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান অর্থমন্ত্রীর

ঢাকা, ৩ ফাল্গুন (১৬ ফেব্রুয়ারি) : আগামী ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ) এর ৪৪তম গভর্নিং কাউন্সিল ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হবে। উল্লেখ্য প্রতি বছর গভর্নিং কাউন্সিলের সভা ইতালিস্থ রোমে ইফাদের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে; কিন্তু এবারই কোভিড-১৯ মহামারির কারণে প্রথম ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আজ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ)-এর প্রেসিডেন্টের সাথে একটি ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় বাংলাদেশ সরকারের আট সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেন। তন্মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ মেসবাহুল ইসলাম, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সমন্বয় ও নরডিক অনুবিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ,  রোমে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্টদূত এবং ইকোনমিক কাউন্সিলর অংশগ্রহণ করেন। ইফাদের পক্ষ থেকে ইফাদ প্রেসিডেন্ট Gilbert F. Houngbo এবং তাঁর দল অংশগ্রহণ করেন।

সভার শুরুতে অর্থমন্ত্রী ইফাদের প্রেসিডেন্টকে ভার্চুয়াল সভায় অংশগ্রহণ এবং ২য় বারের মতো ইফাদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে অগ্রিম ধন্যবাদ জানান।

১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ) এর সদস্য পদ প্রাপ্তির পর থেকে বাংলাদেশে ইফাদের মোট ক্রমপুঞ্জিত বিনিয়োগের পরিমাণ ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতি তথা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের জন্য ইফাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশে ইফাদের কান্ট্রি প্রোগ্রামে অর্থায়নের পরিমাণ ৯৮৮ দশমিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, তন্মধ্যে ইফাদের অবদান ৪১৫ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার; জিওবি’র অবদান ১৩৫ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, অবশিষ্ট অন্যান্য দাতা সংস্থার। ইফাদ এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ৩৪টি প্রকল্পে ঋণ ও অনুদান সহায়তা প্রদান করেছে। এ বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতি তথা ১১ দশমিক ৭ মিলিয়ন পরিবার উপকৃত হয়েছে। ৩৪টি প্রকল্পের মধ্যে ২৭টি প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছে এবং বাকি ৭টি প্রকল্প কৃষি মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। উক্ত প্রকল্পসমূহে ইফাদ বিভিন্ন-সহ-অর্থায়নকারী দাতাসংস্থা যেমনঃ বিশ্বব্যাংক, এডিবি, নেদারল্যান্ড, স্পেন এবং ডেনমার্কের মতো দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন সহযোগীর সাথে অংশীদারীত্বের ভিত্তিতে ঋণ ও অনুদান সহায়তা প্রদান করেছে।

ইফাদ প্রেসিডেন্ট আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্যমুক্ত পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন। এসডিজির Goal-1 এবং Goal-2 এর অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো তথা খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন, ইফাদের গৃহীত কার্যক্রমের বিনিয়োগ বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, জেন্ডার, পুষ্টি, আদিবাসী জনগণের জীবন মানের উন্নয়ন ইত্যাদি উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ইফাদের কারিগরি জ্ঞান, উদ্ভাবনী চিন্তা ও অভিজ্ঞতার আলোকে দরিদ্র, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের কাজে লাগিয়ে কৃষি প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি এবং গ্রামীণ এলাকায়  কর্মসংস্থান সৃষ্টি-সহ টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে ইফাদের ১২তম পরিপূরণে (12th Replenishment) বাংলাদেশের চাঁদার পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য সহেযাগিতা কামনা করেন। ১২তম পরিপূরণ বাস্তবায়নে  আগামী তিন বছরে (২০২২ হতে ২০২৪ সাল) মোট ঋণ ও অনুদান বাবদ ৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণের প্রেক্ষাপটে ইফাদের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ হতে ১ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহের নিমিত্ত সদস্য দেশসমূহের চাঁদা বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

সর্বশেষে অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি উদ্‌যাপনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য ইফাদের প্রেসিডেন্টকে  আমন্ত্রণ জানান। তিনি নতুন মেয়াদে আগামী চার বছরের জন্য প্রেসিডেন্টকে পুনঃ নির্বাচন বিষয়ে বাংলাদেশের সমর্থন ব্যক্ত করেন।