বাংলাদেশের ফোয়েল-মিক্সে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অংশ বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করা হচ্ছে—-বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা, ৭ শ্রাবণ (২২ জুলাই) : বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, বাংলাদেশের ফোয়েল-মিক্সে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অংশ বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। জ্বালানি বৈচিত্র্য, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন কৌশল গ্রহণ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে কাজ করা হচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি হতে ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে সরকার এগুচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী আজ ভারতের গোয়াতে জি-২০ উপলক্ষ্যে “এনার্জি ট্রানজিশন মিনিস্টারিয়াল মিটিং”-এ বক্তব্যকালে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য উৎস হতে ১১৯৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও ৮২৫ দশমিক ২৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ গ্রিডে আসে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে ৩০টি প্রকল্পের মাধ্যমে আরো ১ হাজার ২৬২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প চলমান এবং ৮ হাজার ৬৬৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন। অর্থাৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে ৯ হাজার ৯৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন পাইপ লাইনে আছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৬ মিলিয়ন সোলার হোম সিস্টেমের মাধ্যমে অফ-গ্রিড এলাকায় বসবাসরত ২০ মিলিয়ন লোককে আলোকিত করা হচ্ছে। সোলার মিনিগ্রিডের মাধ্যমে অফ-গ্রিড এলাকায় গ্রিডের মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ দেয়া হচ্ছে। ৭টি সোলার পার্ক করা হয়েছে। আমাদের প্রায় ১০০,০০০ টি বায়ুগ্যাস প্লান্ট রয়েছে। National Renewable Energy Laboratory (NREL)-এর সহযোগিতায় বাংলাদেশে উইন্ড রিসোর্স ম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। ৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে ২৪৫ মেগাওয়াট বায়ু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নেপাল ও ভূটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়াও সামান্তালে চলছে। সমন্বিত জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনাতেও নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। এখানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি (সৌর, বায়ু এবং হাইড্রো ইত্যাদি), পারমাণবিক, বিদ্যুৎ আমদানি (হাইড্রো), হাইড্রোজেন, অ্যামোনিয়া, সিসিএস (কার্বন ডাই অক্সাইড) ক্যাপচার এবং কম্বাইন্ড সাইক্যাল পাওয়ার প্লান্ট নিয়ে পরিকল্পনা সন্নিবেশিত রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বাংলাদেশ ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল করায় প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ চলে গেছে। এই সাহসী পদক্ষেপ সবুজ এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানির প্রতি আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিচ্ছবি। একটি ঘনবসতিপূর্ণ জাতি হিসাবে আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়নে অনন্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবহারের ধরন অনেক উন্নত দেশ থেকে আলাদা এবং সৌরশক্তি বেস লোড পাওয়ার হিসাবে এখানে অনুপযুক্ত। সৌর প্রকল্পের জন্য জমির অভাব একটি বড় বাধা। এই চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করতে প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং গবেষণা প্রয়োজন। নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষ করে বর্জ্য থেকে জ্বালানি এবং বায়ু বিদ্যুতে ব্যাপক বিনিযোগ প্রয়োজন। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগকে আমরা স্বাগত জানাবো।
ভারতের বিদ্যুৎ এবং নতুন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি মন্ত্রী R K Singh, ব্রাজিলের খনি ও জ্বালানি মন্ত্রী Alexandre Silveira de Oliveira, ইন্দোনেশিয়ার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী Arifin Tasrif, COP 28 এর সভাপতি (মনোনীত) Dr. Sultan Al Jaber, গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী Dr. Pramod Sawant সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীগণ বক্তব্য রাখেন। উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও বার্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন।