বাংলাদেশের আজকের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পেছনে মূলত রয়েছে বঙ্গবন্ধুর অবদান — সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা, ৩০ অগ্রহায়ণ (১৫ ডিসেম্বর) : সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেছেন, বাংলাদেশের আজকের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পেছনে রয়েছে মূলত বঙ্গবন্ধুর অবদান। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন না হলে এ অর্জন সম্ভব হতো না। স্বাধীনতার পর এ দেশের উন্নয়ন ও পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধু বিভিন্ন সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং তার বাস্তবায়নও শুরু করেন। তিনি শরণার্থী পুনর্বাসন, ভারতীয় মিত্র বাহিনীকে দেশে ফেরত পাঠানো, খাদ্য ঘাটতি দূরীকরণ, প্রশাসনিক কাঠামো গঠন, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড় থেকে উপকূলীয় এলাকা রক্ষাকল্পে স্থায়ী অবকাঠামো নির্মাণ, আধুনিক শিক্ষা কমিশন গঠন, কৃষি উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ সহ জাতীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের লক্ষ্যে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্রে তিনি তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার দক্ষ, বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নছোঁয়ার দ্বারপ্রান্তে।
প্রতিমন্ত্রী আজ রাজধানীর বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিশেষজ্ঞ বক্তৃতা ও সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি বলেন, জাতির পিতা এদেশের দুঃখী, শোষিত, বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ’৪৮-এ বাংলা ভাষার দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের পথ বেয়ে ’৫২-এর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়লাভ, ’৫৮-এর মার্শাল’ল বিরোধী আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-এর বাঙালির মুক্তির সনদ খ্যাত ছয়দফা আন্দোলন, ‘৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ’৬৯-এর রক্তঝরা গণঅভ্যুত্থান, ’৭০-এর ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ ও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন প্রভূত ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের চূড়ান্ত লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে বাঙালি জাতি। অবশেষে ইতিহাসের মহানায়কের নেতৃত্বে নয় মাসব্যাপী মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হয়। কাক্সিক্ষত স্বাধীনতা অর্জনের মধ্য দিয়ে তিনি বাঙালি জাতিকে হাজার বছরের পরাধীনতা, শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্ত করেছেন।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অভ্ ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবুল মনসুর। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরিটাস অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার বসাক।
পরে প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনী গ্যালারিতে জাদুঘরের ইতিহাস ও ধ্রুপদী শিল্পকলা বিভাগ আয়োজিত ১৫ হতে ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ পর্যন্ত ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক বিশেষ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।