প্রধান মেনু

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবসে রাষ্ট্রপতির বাণী

ঢাকা, ৪ পৌষ (১৯ ডিসেম্বর) : রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন আগামীকাল ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :“বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস ২০২৩’ উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে আমি এ বাহিনীর সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

বীরত্ব ও ঐতিহ্যে গৌরবমণ্ডিত ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ বিজিবি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মরণীয় অবদান রেখেছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাক-হানাদার বাহিনী ঢাকার পিলখানাস্থ তৎকালীন ইপিআর সদর দপ্তর ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর অতর্কিত আক্রমণ চালায়। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ইপিআরের ওয়্যারলেসযোগেই বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে যায়। মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ এবং বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফসহ এ বাহিনীর ৮১৭ জন অকুতোভয় সদস্য আত্মোৎসর্গ করে দেশপ্রেমের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে গৌরবময় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ বাহিনীকে ২০০৮ সালে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধসহ দেশমাতৃকার সেবায় বিভিন্ন সময়ে বিজিবির যে সকল সদস্য আত্মত্যাগ করেছেন, আমি তাঁদের আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করছি।

স্বাধীনতার পরপরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ বাহিনীর পুনর্গঠন ও আধুনিকায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিজিবিকে একটি আধুনিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন ২০১০’ প্রণয়ন ও ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন-২০৪১’ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ফলে এ বাহিনীর সার্বিক কর্মকাণ্ডে গতি সঞ্চারিত হয়েছে। একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি বিশ্বমানের আধুনিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিজিবিতে সংযোজন করা হয়েছে অত্যাধুনিক বিভিন্ন সরঞ্জাম। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে একটি ত্রিমাত্রিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে জল, স্থল ও আকাশপথে দায়িত্ব পালনের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে। ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে সীমান্তের সার্বিক সুরক্ষা, চোরাচালান প্রতিরোধ, নারী-শিশু এবং মাদক পাচাররোধে বিজিবি সদস্যরা নিরবচ্ছিন্ন দায়িত্ব পালন করছে। দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ যেকোনো জাতীয় সংকট ও জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায়ও বিজিবি প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে।

২০৪১ সালের মধ্যে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদস্যরা মহান মুক্তিযুদ্ধ ও দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করার মাধ্যমে এ অগ্রযাত্রায় শামিল হবেন- এ প্রত্যাশা করছি।

আমি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-এর অব্যাহত সাফল্য কামনা করি।

জয় বাংলা।

খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”