বরমী বাজারের “বানরগুলো”- প্রশাসনের খাদ্য সহযোগিতায় ফিরে পেল নতুন জীবন।

ইব্রাহিম মাহমুদ, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ পেটে, পিঠে ঝোলে আছে বাচ্চা আর – এভাবেই দৌঁড়ে আসছে মা বানরেরা খাবার নিতে। এসব বানর দেখতে পেয়ে শিশুরা যেন বেজায় খুশি। এমন দৃশ্য দেখে বুঝা যায়, আবারও প্রাণ ফিরে পেতে শুরু করেছে বিলুপ্ত প্রায় বরমী বাজারের ঐতিহ্য বহনকারী বানরগুলো।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বরমী বাজারের কয়েকশ বছরের ঐতিহ্য রয়েছে মানুষের সাথে বণ্যপ্রাণী বানরের বসবাস। কিন্তু গত কয়েক বছর আগে খাদ্য সংকট সহ নানাধরনের প্রতিবন্ধকতায় প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলায় দ্রুত কমতে থাকে বানরের সংখ্যা। বিশেষ করে ক্ষুধার্ত বানর খাবারের খোঁজে বাসাবাড়িতে হানা দেয়ায় এদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে পরেছিল স্থানীয়রা। নানাধিক বিবেচনায় বণ্যপ্রাণী রক্ষায় গত বছরের অক্টোবরে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এগিয়ে আসেন। বানরের আহারের ব্যবস্থায় তিনি খয়রাতি সাহায্য হিসেবে পাঁচ টন চাউল বরাদ্ধ দেন। যা থেকে প্রতি সপ্তাহের দু’দিন বানরকে রুটি ও কলা খেতে দেয়া হয় আর এতেই ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। এখন প্রতিটি বানরের সাথে সাথে ঘুরে বেড়াচ্ছে বাচ্চা। গত এক বছরেই এদের সংখ্যা দিগুণ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
দীর্ঘদিন যাবৎ বরমী বাজারের বানর এলাকার ঐতিহ্য বহন করে আসছে। তবে আহার, বাসস্থান ও পরিবেশের অভাবে দ্রুত কমতে ছিলো এই বানরের সংখ্যা। গত বছর বানরের সংখ্যা আনুমানিক পাঁচশত এর মত থাকলেও প্রশাসনের দেয়া পর্যাপ্ত খাবার পেয়ে বর্তমানে দ্রুত বংশবৃদ্ধি হচ্ছে। বর্তমানে সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তবে বানরের আহার যোগান অব্যাহত রাখা প্রয়োজন। এছাড়াও খাবারের সাথে সাথে এদের চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করলে বরমীর ঐতিহ্য আবার ফিরে আসবে।
এ বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক ড: দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর জানান, ‘বন্যপাণী রক্ষায় বর্তমান সরকারের নানামূখী পদক্ষেপ রয়েছে। এসব প্রাণীদের সরকারীভাবে আহার দেয়া হচ্ছে গত এক বছর ধরে। আর সেই পর্যাপ্ত খাবার ও পরিচর্যা পাওয়ায় এখন দ্রুত বংশবৃদ্ধি ঘটছে বানর গুলোর।’ এদিকে বানরের নিয়মিত খাবার যোগানের জন্যও এলাকাজুড়ে বিভিন্ন ফলদ বৃক্ষ রোপন করা হয়েছে। যা বানরগুলোর অভয়ারণ্য হিসেবে বিবেচিত। আগামীতে এদের চিকিৎসার জন্য প্রশাসনিক সহযোগীতা করা হবে।
(পরের খবর) ফরিদপুর-১ আসনে নৌকার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারনা »