বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী

ঢাকা, ২৪ শ্রাবণ (৮ আগস্ট) : বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এঁর ৯৩ জন্মবার্ষিকী আজ। এ উপলক্ষ্যে ডাক অধিদপ্তর স্মারক ডাকটিকিট ও উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেছে এবং ডেটাকার্ড প্রকাশ করেছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ১০ টাকা মূল্যমানের স্মারক ডাকটিকিট, দশ টাকা মূল্যমানের উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন এবং ৫ টাকা মূল্যমানের ডেটা কার্ড ও একটি বিশেষ সীলমোহর প্রকাশ করেন।
মন্ত্রী আজ সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ আয়োজিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভার প্রাক্কালে স্মারক ডাকটিকিট ও উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, বিএসসিএল এর চেয়ারম্যান ড.শাহজাহান মাহমুদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আমিরুল ইসলাম, যুগ্মসচিব মো: তৈয়বুর রহমান, ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হারুনুর রশিদ এবং টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: রফিকুল ইসলাম বক্তৃতা করেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বঙ্গমাতাকে বাংলাদেশের আদর্শ মায়েদের শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব মনেপ্রাণে একজন আদর্শ বাঙালি নারী। অসংখ্য কঠিন প্রতিকূলতার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তিনি একদিকে মা অন্যদিকে বাবা এই দুইয়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে তাঁর সন্তানদের সুশিক্ষায় গড়ে তুলেছেন, দলের জন্য কাজ করেছেন, নেতা-কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
ষাটের দশকে ছাত্রলীগের রাজপথের লড়াকু সৈনিক মোস্তাফা জব্বার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পেছনে নীরবে নিভৃতে প্রেরণার সর্বোচ্চ উৎস হিসেবে কাজ করেছেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব। শেখ ফজিলাতুন নেছার মতো ধীরস্থির, বুদ্ধিদীপ্ত, মেধাবী, দূরদর্শী, সাহসী, বলিষ্ঠ, নির্লোভ ও নিষ্ঠাবান ইতিবাচক ভূমিকা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি কিংবা জাতির হাজার বছরের ইতিহাসের মহাকাব্যের মহানায়ক হতে ব্যাপকভাবে সহায়তা করেছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। ৭০ এর দশকের শুরুতে স্বাধীনতার প্রাক্কালে মন্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের ছাত্র হিসেবে তাঁর দেখা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহপাঠিনী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চালচলনকে চিরায়ত বাংলার অতি সাধারণ একজন মানুষের সাথে তুলনা করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা হওয়া সত্ত্বেও নিজ বিভাগের শিক্ষকদের অনেকেই জানতেন না তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। তিনিও নিজের পরিচয় কখনো প্রকাশ করতেন না যে তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা। এটাই ছিলো সন্তানদের প্রতি বঙ্গমাতার শিক্ষা। এই কঠিন অবস্থা সামাল দেওয়া একজন নারীর পক্ষে কি পরিমাণ চ্যালেঞ্জিং তা বর্ণনার অপেক্ষা রাখে না। তা সত্ত্বেও তিনি দৃঢ় থেকেছেন।
মন্ত্রী বলেন, শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মা নন, তিনি বাঙালি জাতির স্বাধীনতার প্রেরণাদাত্রী বলে মন্ত্রী তাঁকে আখ্যায়িত করেন। ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের প্রাক্কালে বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতা ঘোষণা প্রদানে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের পক্ষ বিপক্ষ মতামত অগ্রাহ্য করে শেখ ফজিলাতুন নেছা বঙ্গবন্ধুকে নিজের মতো করে জাতিকে দিক নির্দেশনা দেওয়ার মানসিক শক্তি যোগিয়েছেন এই মহিয়সী নারী। তিনি বলেন, জাতির পিতার মত একজন মহা নায়কের সহধর্মীনি হওয়ার সকল যোগ্যতায় তিনি নিজেকে প্রমাণিত করে জাতির পিতার আন্দোলন সংগ্রামে তার অবদান চির ভাস্বর হয়ে থাকবে। মন্ত্রী নতুন প্রজন্মের কাছে এই মহিয়সীর অবদান তুলে ধরতে আরও বেশি করে লেখক ও প্রকাশকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী ঢাকা কলেজে অধ্যয়নকালে শেখ কামালকে ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগের ঘাটি হিসেবে গড়ে তোলার মহান সংগঠক আখ্যায়িত করে বলেন, তিনি কেবল একজন রাজনৈতিক ও উঁচু মাপের সংগঠকই ছিলেন না তিনি নাটক – ক্রীড়াক্ষেত্রেও আইকন হিসেবে কাজ করেছেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বিশেষ মোনাজাত করা হয়।