বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠান “মুক্ত স্বদেশে জাতির পিতা”

ঢাকা, ২৬ পৌষ (১০ জানুয়ারি) : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে “মুক্ত স্বদেশে জাতির পিতা” প্রতিপাদ্যে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। আজ বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশনের শহিদ মনিরুল আলম মিলনায়তন থেকে সকল টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই পরিবেশিত হয় জাতীয় সঙ্গীত ও মুজিববর্ষের থিমসঙ্গীত। আলোচনা পর্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এবং আলোচনায় অংশ নেন সাবেক সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধুর মূল লক্ষ্য ছিল শোষণ-বঞ্চনার হাত থেকে দেশকে মুক্তি দেওয়া, মানুষের ন্যূনতম মৌলিক চাহিদা পূরণ করা। তিনি আরো বলেন, ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে প্রথমে পরিবারের কাছে আসেননি, সোজা চলে গিয়েছিলেন তাঁর জনতার কাছে। বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছরে তৃণমূল মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে, জনগণের ক্ষমতায়নে কাজ করেছেন উল্লেখ করে তিনি বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সবাইকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে কাজ করার আহ্বান জানান।
মুজিববর্ষ উদ্যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী তাঁর স্বাগত বক্তব্যে ১০ জানুয়ারির সেই উৎফুল্ল সমাবেশে উপস্থিত থাকার স্মৃস্তিচারণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের সার্বক্ষণিক অনুপ্রেরণা। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে উপনীত হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুকে লন্ডনের হিথ্রো বিমান বন্দরে স্বাগত জানানোর স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ। ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক তাঁর বক্তব্যে বলেন, এবারের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের বিশেষত্ব হলো এটি বঙ্গবন্ধুর মুক্ত স্বদেশে ফিরে আসার সুবর্ণজয়ন্তী।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ রেহানার লেখা বাবা ও মাকে নিয়ে দুটি কবিতা আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট আবৃত্তিকার আসাদুজ্জামান নূর। পরে দেশের খ্যাতনামা শিল্পীদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আরো ছিল বিশ্বখ্যাত অস্কারজয়ী ভারতীয় সুরকার ও সংগীতশিল্পী এ আর রহমানের কন্ঠে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাংলা গান।
উল্লেখ্য, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষ্যে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন ও বিশেষ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। পরিবর্তিত কোভিড পরিস্থিতির কারণে জনগণের স্বাস্থ্যঝুঁকির বিষয়টি সর্বোচ্চ বিবেচনায় এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেন ও জনসমাগম এড়িয়ে অনুষ্ঠান আয়োজনের নির্দেশনা প্রদান করেন। এর প্রেক্ষিতে “মুক্ত স্বদেশে জাতির পিতা” প্রতিপাদ্যে সরাসরি সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।