ফরিদপুরে ব্রান্ডিং মেলার শুভ উদ্বোধন

মোঃমাহফুজুর রহমান বিপ্লব, ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ “সোনালি আঁশে ভরপুর, ভালোবাসি ফরিদপুর”- এই শ্লোগানেকে সামনে রেখে ফরিদপুর জেলা ব্র্যান্ড “পাট” ও পাট জাত দ্রব্যকে দেশে ও দেশের বাহিরে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষে গতকাল ৩০ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, তাঁত-বস্ত্র ও পাট পণ্যে জেলা ব্রান্ডিং মেলা। শনিবার বিকেলে (৩০ নভেম্বর) মেলার উদ্বোধন করেন ফরিদপুর ৩ আসনের সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মন্ডোলীর সদস্য, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইন্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
ফরিদপুর জেলার পাট বিশ্বমানের। আর সে কারনেই পাটকে সরকারিভাবে ফরিদপুর জেলার ব্র্যান্ড করা হয়েছে। পাট থেকে উৎপাদিত পন্যকে দেশে ও দেশের বাহিরে ছড়িয়ে দেওয়া ও বাজারজাত করার লক্ষে ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে গতকাল ৩০ নভেম্বর থেকে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ মাঠে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, তাঁত-বস্ত্র ও পাট পণ্য জেলা ব্রান্ডিং মেলা। মেলায় স্থানপেয়েছে পাটের তৈরি বাহারি পন্য শো পিস, শপিং ব্যাগ, হ্যান্ড ব্যাগ, পর্দা, টেবিল ম্যাট, ফ্লোর ম্যাট, মেয়েদের গহনা, সেন্ডেল এবং ছিকাসহ অন্যান্য সামগ্রী। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের তাঁতের তৈরি পোশাক, শাড়ি, থ্রি-পিস, বিভিন্ন ধরনের হস্ত ও কুটির শিল্প, মৃৎ শিল্প, খেলনা, ক্রোকারীজ সামগ্রী, কসমেটিকসামগ্রীসহ বাহারি পন্যের ১২০টি স্টল স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে। উদ্বোধনের দিনেই দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ।
দর্শনার্থীরা বলছেন, এই মেলার মাধ্যমে ফরিদপুরকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা হবে। আর দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যবসায়ীরা বলছেন, মেলায় এসেছি ব্যবসা করার জন্য, আশা করছি ব্যবসা ভাল হবে। মেলায় শিশুদের বিনোদনের জন্য থাকছে কিডস্ কর্ণার, চরকি, নাগরদোলা, ওয়াটার বল, ট্রেনসহ বিভিন্ন আয়োজন। এছাড়াও মেলায় স্থান পেয়েছে বিভিন্ন ধরনের খাবারের দোকান। আছে নামাজের স্থান।এবার নতুন করে স্থাপন করা হয়েছে ব্রেস্টফিডিং কর্নার, রয়েছে বঙ্গবন্ধু কর্নার যেখানে থাকবে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ তথা বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে লেখা বিভিন্ন ধরনের বই, দর্শনার্থীরা তাদের সময়মতো এখানে বসেই বই পড়তে পারবেন, জানতে পারবেন বাংলাদেশের তথা স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস। শনিবার বিকেলে ফিতা কেঁটে বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন ইন্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার , জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ লোকমান হোসেন মৃধা, পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান , স্থানীয় সরকার বিভাগ ফরিদপুরের উপ-পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রোকসানা রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ আসলাম মোল্লা, জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সুবোল চন্দ্র সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ঝর্ণা হাসান, শহর আওয়ামীলীগ সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী বরকত ইবনে সালাম, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও কোতোয়ালি আওয়ামীলীগ সভাপতি আঃ রাজ্জাক মোল্যা, জেলা যুবলীগ আহ্বায়ক এএইচএম ফুয়াদ, ফরিদপুর চেম্বারের সভাপতি মো. ছিদ্দিকুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম রেজা প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক বলেন, ব্রান্ডিংকে কেন্দ্র করে আমরা অনেককিছু করছি। আমাদের ব্রান্ডিং পন্য পাট।আমরা পাট শিল্পটাকে আরও কিভাবে দেশে ও দেশের বাইরে এটার ব্যাপকতা আনতে পারি সেই উদ্দেশ্যে এই মেলা। আর একটা হচ্ছে প্লাস্টিকের বিকল্প। আর পাটকেই প্লাস্টিকের বিকল্প হিসাবে ভাবা হচ্ছে। আর ব্রান্ডিংটাকে পরিচিত করার জন্য এই মেলার আয়োজন। প্রধান অতিথি বলেন, ফরিদপুরের পাটের একটি বিশেষত্ব আছে। যার কারণে বিশ্ব দরবারে এই পাটের আঁশটা সমাদ্রিত। জেলা প্রশাসক সেই পাটকে জেলা ব্রান্ডিং হিসাবে নির্বাচিত করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন উন্নয়ন শুধু ঢাকায় হলেই হবেনা, উন্নয়ন সারা দেশে হতে হবে। সেই দৃষ্টিকোন থেকে জেলা ব্রান্ডিং ৬৪ জেলায় অত্যান্ত গুরুত্ব বহণ করে।
তিনি আরও বলেন, ইংল্যান্ডে ডান্ডি নামক অনেকগুলো পাটকল যেখানে চট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি তৈরী হয়। তিনি বলেন, পলিথিন /পেট্রোলিয়াম জাতীয় জিনিস থেকে যে দ্রব্যাদি তৈরী হয় তা পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরূপ যা সমগ্র বিশ্বে নিষিদ্ধ, অদুর ভবিষ্যতে পাট থেকে তৈরী পলিথিন ব্যাগ আমরা ব্যবহার করতে পারবো যেটা হবে পরিবেশ বান্ধব।সুতরাং পাটকে আমাদের গুরুত্ব দিতেই হবে। আর তাই আমাদের তথা ফরিদপুরের শ্লোগান হবে “সোনালি আঁশে ভরপুর, ভালোবাসি ফরিদপুর” যা সময় উপযোগী।
« খুলনা জেলা ভূমি কমিটির ষান্মাসিক সভা অনুষ্ঠিত (পূর্বের খবর)